বিবিধ

চিঠি দিবস আজ: স্মৃতির খামে আবেগের বসবাস

ডেস্ক ‍নিউজ

ডিবিসি নিউজ

সোমবার ১লা সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০:২৪:১৩ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

আজ ১লা সেপ্টেম্বর, বিশ্ব চিঠি দিবস। কি-বোর্ডের ক্লিকে আর টাচস্ক্রিনের স্পর্শে যখন মুহূর্তেই বার্তা পৌঁছে যায় বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে, তখন হাতে লেখা একটি চিঠির জন্য অপেক্ষা করার অনুভূতি হয়তো অনেকের কাছেই এক বিস্মৃত অতীত।

তবু সেই বিস্মৃতপ্রায় আবেগ আর কাগজের ভাঁজে লুকিয়ে থাকা আন্তরিকতাকে নতুন করে স্মরণ করার দিন আজ। প্রযুক্তির চরম উৎকর্ষের এই যুগে দাঁড়িয়ে চিঠি লেখার সেই পুরনো ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখতেই বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে এই দিবস।

 

"ভালো আছি, ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো"- গানের এই লাইনগুলো একসময় বাস্তব ছিল। প্রিয়জনের হাতের ছোঁয়া মাখা একটি চিঠির জন্য ডাকপিয়নের পথ চেয়ে থাকার সেই মধুর প্রতীক্ষার দিনগুলো এখন অনেকটাই স্মৃতি। 

 

কিন্তু ই-মেইল, মেসেঞ্জার আর ভিডিও কলের ভিড়ে একটি হাতে লেখা চিঠি যে আবেদন তৈরি করতে পারে, তার তুলনা হয় না। প্রতিটি অক্ষরের বাঁকে মিশে থাকে লেখকের আবেগ, কাগজের গন্ধের সাথে জড়িয়ে থাকে তার উপস্থিতি। এটি শুধু একটি বার্তা নয়, বরং একটি অমূল্য স্মৃতিচিহ্ন যা আজীবন সংগ্রহে রাখা যায়।

 

বিশ্ব চিঠি দিবসের প্রচলন খুব বেশিদিন আগের নয়। ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ান শিল্পী, লেখক ও আলোকচিত্রী রিচার্ড সিম্পকিন এই দিবসটির সূচনা করেন। নিজ দেশের কিংবদন্তি ব্যক্তিত্বদের কাছে তিনি চিঠি লিখতেন এবং তাদের কাছ থেকে পাওয়া হাতে লেখা উত্তরগুলো তাকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করতো। 

 

এই ব্যক্তিগত ভালো লাগা থেকেই তিনি চিঠি লেখার আনন্দ এবং এর আবেদনকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখেন। তারই উদ্যোগে প্রতি বছর ১লা সেপ্টেম্বর দিনটি চিঠি লেখার জন্য উৎসর্গ করা হয়।

 

ডিজিটাল যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্রুততা অনস্বীকার্য, কিন্তু তা অনেক সময়ই যান্ত্রিক ও আবেগহীন। অন্যদিকে, চিঠি লেখার প্রক্রিয়াটি ধীর এবং চিন্তাশীল।লেখককে প্রতিটি শব্দ নিয়ে ভাবতে হয়, গুছিয়ে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে হয়। 

 

এই ধীরগতিই চিঠিকে করে তোলে আরও বেশি আন্তরিক ও ব্যক্তিগত। একটি চিঠি লেখার মাধ্যমে কেবল অন্যের সাথে নয়, নিজের সাথেও সংযোগ স্থাপন করা যায়। এটি মানসিক চাপ কমাতেও সাহায্য করে বলে মনে করেন অনেকে।

 

আজকের এই বিশেষ দিনে, প্রযুক্তির পর্দা থেকে চোখ সরিয়ে কলম আর কাগজ তুলে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। হতে পারে সেটি দূরে থাকা কোনো বন্ধুকে, বাবা-মাকে অথবা ভবিষ্যৎ নিজেকে উদ্দেশ্য করে লেখা একটি চিঠি। 

 

এই যান্ত্রিকতার যুগে এক টুকরো কাগজে লেখা কয়েকটি লাইন হয়তো হয়ে উঠতে পারে কারো মুখে অমলিন হাসি ফোটানোর কারণ, হয়ে উঠতে পারে সম্পর্কের গভীরতাকে নতুন করে আবিষ্কারের একটি সুন্দর মাধ্যম। কারণ দিনশেষে, কিছু আবেগ খামে বন্দি হলেই বেশি সুন্দর লাগে।

 

ডিবিসি/এমইউএ

আরও পড়ুন