হাজারো মানুষের অশ্রুসিক্ত ভালোবাসায় এবং পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় নিজ শহর রাজশাহীর মাটিতে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগর। মঙ্গলবার বিকেলে রাজশাহী জেলা মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে নগরীর সপুরা কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এর আগে দুপুর থেকেই রাজশাহীর উপশহরে তৌকিরের পৈতৃক নিবাসে এলাকাবাসী ও স্বজনেরা ভিড় জমান তাদের প্রিয় সন্তানকে শেষবার দেখতে। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তার মরদেহবাহী গাড়িটি বাড়ির সামনে এসে পৌঁছালে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। সেখানে কিছুক্ষণ রাখার পর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় রাজশাহী জেলা মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে। বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে অনুষ্ঠিত জানাজায় পুলিশ, সেনা ও বিমানবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেন।
জানাজায় অংশ নেওয়া এলাকাবাসীর কাছে সাগর ছিলেন একজন মেধাবী, বিনয়ী ও সদা হাস্যোজ্জ্বল তরুণ। তার এই অকাল মৃত্যুতে শহরজুড়ে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। তারা বলেন, "সাগরের মতো একজন সাহসী ও দক্ষ বৈমানিকের মৃত্যু দেশের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।"
রাজশাহীতেই বেড়ে উঠেছেন তৌকির। এখানকার ল্যাবরেটরি স্কুল থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি পাশের পর তিনি পাবনা ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হন। ২০১৪ সালে এসএসসি এবং ২০১৬ সালে এইচএসসি কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে তিনি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে যোগ দেন, দেশের আকাশ রক্ষার স্বপ্ন নিয়ে।
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগরসহ এ পর্যন্ত ৩১ জন নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই শিশু শিক্ষার্থী।
ডিবিসি/এফএইচআর