বর্তমানে আমরা সারা বিশ্বের সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে যুক্ত থাকতে গুগল, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটস অ্যাপ, টিকটক, টুইটারের মতো প্ল্যাটফর্মে যুক্ত থাকি। মূলত ইন্টারনেটের মাধ্যমে একাধিক অ্যাপ ব্যবহার করে আমরা সাধারণ ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ করে থাকি। যার ইতিবাচক ব্যবহার আজ প্রযুক্তিগত এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের এক অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে।
তবে প্রকাশ থাকে যে, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তিধর এবং প্রায় ১৪২ কোটি জনসংখ্যার দেশ চীনে কিন্তু আমেরিকা কিংবা পশ্চিমা বিশ্বের কোন সোশ্যাল মিডিয়া ও অ্যাপ ব্যবহারের সুযোগ নেই। তার মানে এই নয় যে তারা সারা বিশ্ব থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে।
আসলে চীনের বর্তমান শি জিং পিং সরকার নিজের দেশকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে সুরক্ষিত রাখতে পশ্চিমা সোশ্যাল মিডিয়া এবং অ্যাপ ব্যান করলেও তারা কিন্তু নিজেদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে অবিশ্বাস্যভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। চীনের সাধারণ মানুষ এখন গুগলের পরিবর্তে বাইদু, হোয়াটস অ্যাপের পরিবর্তে ইউচ্যাট, ইউটিউবের পরিবর্তে বিলি বিলি, টুইটারের পরিবর্তে উইবে সহ নিজেদের তৈরি আরো বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল অ্যাপ ও মিডিয়া ব্যবহার করে থাকে। তাছাড়া আমরা হয়ত অনেকেই জানি না যে, সারা বিশ্বে অত্যন্ত জনপ্রিয় সোশ্যাল অ্যাপ টিকিটক হচ্ছে কিন্তু চীনের তৈরি।
চীনের নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন, ইনোভেটিভ আইডিয়া এবং নিজস্ব শক্তিশালী সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম আমাদের একেবারেই কল্পনার বাহিরে রয়ে গেছে। চীনের বর্তমান শি জিং পিং সরকার দেশটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং গবেষণায় এগিয়ে যেতে এক আমেরিকার পর সারা বিশ্বের মধ্যে সর্বাধিক অর্থ বিনিয়োগ করে।
দেশটি আজ তাদের উচ্চস্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইনোভেটিভ আইডিয়া তৈরির কারখানা বা ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাবে পরিণত করেছে। যার কাঙ্ক্ষিত সুফল কিন্তু আজ তারা কার্যকরভাবেই আদায় করে নিয়ে সমগ্র পশ্চিমা বিশ্বকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। বিশেষ করে বর্তমানে বৈশ্বিক বাণিজ্যের মোট প্রায় ৩৮% একাই নিয়ন্ত্রণ করে চীন।
তবে এটা ঠিক যে, চীনের মতো দেশের নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়ার সুবিধার পাশাপাশি বেশকিছু অসুবিধা ও ত্রুটি রয়ে গেছে। বিশেষ করে সাধারণ নাগরিকের উপর সরকারের অতিরিক্ত নজরদারি, ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা নষ্ট এবং ভিন্নমত দমনে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহারের আশংকা থেকে যায়।
যদিও চীনের মতো উদীয়মান দেশের জন্য নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া ও স্যাটেলাইট নেটওয়ার্কিং সিস্টেম ব্যবহার প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার পরিচয় বহন করে। তবে এই সমস্যাগুলোও কিন্তু এড়িয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ থাকে না। তবে এক্ষেত্রে কিছুটা ত্রুটি এবং সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও চীনের পরিকল্পিত প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও বিপ্লবের প্রশংসা না করে পারা যায় না।
ডিবিসি/কেএলডি