সুদানের আল-ফাশির শহরে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস এর দখলের পর সেখান থেকে প্রাণে বেঁচে ফেরা মানুষেরা শোনালেন ভয়াবহ নির্যাতনের কাহিনী।
নৃশংসতার প্রত্যক্ষদর্শী ৬২ বছর বয়সী আব্দুল কাদির আব্দুল্লাহ আলী বিবিসিকে জানান, আরএসএফ যোদ্ধারা পলায়নরত সাধারণ মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছিল। তিনি বলেন, ওরা বয়স্ক বা সাধারণ নাগরিক কাউকেই ছাড়ছিল না। বন্দুকের সব গুলি যেন মানুষের ওপরই শেষ করছিল।
সবচেয়ে লোমহর্ষক বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, আরএসএফ-এর কিছু সদস্য গাড়ি নিয়ে এসেছিল। তারা যদি দেখত রাস্তায় পড়ে থাকা কোনো মানুষ এখনো শ্বাস নিচ্ছে, তবে নির্দয়ভাবে তাদের ওপর দিয়েই গাড়ি চালিয়ে দিচ্ছিল।
বাঁচার জন্য প্রাণপণ দৌড় দীর্ঘদিন ডায়াবেটিসের ওষুধ না পাওয়ায় আব্দুল কাদিরের পায়ে স্নায়ুর মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে, ফলে তিনি খুঁড়িয়ে হাঁটেন। কিন্তু আল-ফাশির দখলের দিন আতঙ্কে তিনি নিজের পায়ের ব্যথাও ভুলে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, সেদিন সকালে চারদিকে শুধু গুলি আর বিস্ফোরণের শব্দ। ভয়ে মানুষ দিকভিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে দৌড়াচ্ছিল। বাবা, ছেলে, মেয়ে যে যার মতো করে পালাচ্ছিল।
কখনও হামাগুড়ি দিয়ে, আবার কখনও লুকিয়ে এভাবেই তিনি আল-ফাশির থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের গুরনি গ্রামে পৌঁছাতে সক্ষম হন।
বেঁচে থাকার কৌশল মোহাম্মদ আব্বাকার আদম নামের স্থানীয় এক কর্মকর্তা জানান, তিনি নিজেকে বয়স্ক দেখাতে সাদা দাড়ি রেখেছিলেন। তাঁর আশা ছিল, বয়স্ক মনে করে হয়তো আরএসএফ সদস্যরা তাঁকে কিছুটা ছাড় দেবে। তিনি প্রথমে জামজাম ক্যাম্প থেকে আল-ফাশিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন, কিন্তু শহর পতনের ঠিক আগের দিন সেখান থেকেও পালাতে বাধ্য হন।
ডিবিসি/এমইউএ