একসময় পরিচিত ছিলো চোর-ডাকাতের গ্রাম নামে। কারণ সে গ্রামের অধিকাংশ মানুষ জড়িত ছিলো চুরি-ডাকাতিতে। দিন বদলে গেছে, সে গ্রামের অধিকাংশ পুরুষ এখন প্রবাসী। ফলে সব দিক থেকে উন্নতির ছোঁয়া লেগেছে সেখানে। বলছি মেহেরপুর সদর উপজেলার টেংগার মাঠ গ্রামের কথা।
মেহেরপুর শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে সীমান্ত ঘেঁষা গ্রাম টেংগার মাঠ। অভাব অনটনে এই গ্রামের অধিকাংশ মানুষ একসময় জড়িত ছিলো চুরি ডাকাতিতে। সেজন্য দিন দিন গ্রামটি পরিচিতি পায় চোর-ডাকাতের গ্রাম নামে।
১৯৮৯ সাল থেকে তখনকার পুলিশ সুপার গিয়াস উদ্দিনের হাত ধরে পরিবর্তন আসে এই গ্রামে। সৎ পথে উপার্জনের ব্যবস্থার পাশাপাশি পুলিশের পক্ষ থেকে দেয়া হয় চাল, ডাল, কাপড়সহ বিভিন্ন সহযোগিতা। এছাড়া, মামলা থেকে নামও খারিজ করে দেয়া হয়।
মেহেরপুর পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলী বলেন,'এরা যেন অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারে। তাদের বদনাম ঘুচিয়ে, মূল অর্থনীতির স্রোতধারায় আসতে পারে সে ব্যাপরে পুলিশের যে কার্যক্রম সেটা তাদের জন্য ছিলো।'
একে একে প্রবাসে পাড়ি জমাতে থাকে গ্রামের যুব সমাজ। এখন এই গ্রামের ৯০ ভাগ পরিবারের সদস্য রয়েছেন বিভিন্ন দেশে। ফলে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। ঘুচেছে অপবাদ, এখন সবাই ডাকে প্রবাস গ্রাম।
দুই সাবেক ডাকাত এ প্রসঙ্গে বলেন,'আমাদেরকে বলা হয়েছিলো তোমরা খারপ পথের লোক তোমার মারা গেলে কিছু যাবে আসবে না। তোমাদেরকে আমরা সাহায্য করবো, তোমরা ভালো পথে গেলে ভালো হতে পারবা।'
এক সময় যে গ্রামের ছেলে-মেয়েদের বিয়ে হতো না। এখন সেখানকার ছেলে মেয়ের বিয়ে হয় ধুমধাম করে। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারসহ নানা পেশায় যুক্ত গ্রামটির তরুণ-তরুণীরা।
মানবাধিকার কর্মী এনামুল হক বকুল জানান,'জেলা পুলিশ একটা মটিভেশনাল কার্যক্রম চালু করে। আস্তে আস্তে তাদেরকে ভালো পথে নেয়ার যে কাযর্ক্রম সেটা নেয়া হয়।'
সামাজিক ভাবে বেড়েছে আত্মসম্মান। বাপ দাদার দুর্নাম ঘুচিয়ে নিজেদের অন্যভাবে পরিচিত করতে পেরে খুশি গ্রামের মানুষ।