শরীয়তপুরের নড়িয়ায় রাজনীতির রঙ বদলে নতুন পরিচয়ে আবির্ভূত হয়েছেন একসময়ের ছাত্রলীগ নেতা ও চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে অভিযুক্ত তাজিম দেওয়ান। ২০২২ সালে ঘড়িসার ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী এবং মাদকের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া এই ব্যক্তি বর্তমানে বিএনপিপন্থি নবগঠিত শ্রমিক দলের ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক পদ পেয়েছেন। এই ঘটনা পুরো উপজেলা জুড়ে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনে সক্রিয় থাকা তাজিম দেওয়ানের এই আকস্মিক দল পরিবর্তন স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। ঘড়িসার ইউনিয়নের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, তাজিম ও তার পরিবার আওয়ামী লীগের পরিচয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করত এবং মাদকের রমরমা ব্যবসা চালাত। ২০২০ সালে তাজিম ইয়াবাসহ ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন। এমন একজন ব্যক্তি কীভাবে হঠাৎ করে শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক হন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
ঘড়িসার ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনির সরকার বলেন, "তাজিমের পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল এবং সে আমাদের সাথে সক্রিয় ছিল। তার ও তার বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা আছে, তবে সেটা কীসের মামলা তা আমি জানি না।"
অন্যদিকে, নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান সাগর বলেন, "তাজিমের চাচা ইউনিয়ন যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি, তার বড় ভাই স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক। পুরো আওয়ামী লীগ পরিবারের লোক হয়ে সে কীভাবে ভোল পাল্টে শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক হলো, তা আমার জানা নেই। তবে ওরা দুই ভাই এলাকার চিহ্নিত ইয়াবা ও অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ী।"
তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তাজিম দেওয়ান। তিনি দাবি করেন, "ছাত্রলীগের যে কমিটির কথা বলা হচ্ছে, সেটি ভুয়া ও এডিট করা ছবি। আমি কখনো কোনো ছাত্রলীগ কমিটিতে ছিলাম না।" মাদক মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, তাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছিল।
এ বিষয়ে নড়িয়া উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি সাইফুল শিকারি বলেন, "তাজিম দেওয়ান ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল না। তবে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত কি না, সেটা জানি না। যদি সে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত হয়, তাহলে তা সংগঠনের নীতির পরিপন্থি।"
জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি কাইয়ুম মুন্সী চুন্নু জানান, নড়িয়া উপজেলার সদস্যসচিব তাকে জানিয়েছেন যে তাজিম ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত নন। তবে তিনি আশ্বাস দেন, "মাদকের সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে তাকে পদ থেকে অপসারণ করা হবে।"
ডিবিসি/এএনটি