জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এই মাসের শুরুতে মায়ানমার উপকূলে দুটি নৌকা দুর্ঘটনার খবরে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন প্রকাশ করেছে। তার জানিয়েছে, তারা অনুমান করছে সাগরে নিখোঁজ ৪২৭ জন রোহিঙ্গা সমুদ্রে মারা গেছেন।
সংস্থাটি বলছে, এই বছর রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তার খোঁজে সমুদ্রে এটিই হবে সবচেয়ে মারাত্মক ট্র্যাজেডি। ২০২৫ সালে এ পর্যন্ত এই অঞ্চলে বিপজ্জনক সমুদ্র চলাচলের চেষ্টাকারী প্রতি ৫ জনের মধ্যে ১ জনের মৃত্যু বা নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। যার ফলে আন্দামান সাগর এবং বঙ্গোপসাগরের জলসীমা বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক ট্র্যাজেডির মধ্যে রয়েছে।
রিপোর্ট অনুসারে দুটি পৃথক নৌকায় প্রায় ৫১৪ জন রোহিঙ্গা ভ্রমণ করছিলেন। প্রথম নৌকাটিতে ২৬৭ জন ছিল। তাদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি বাংলাদেশের কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির থেকে এবং বাকিরা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে ভ্রমণ করছিল। ৯ই মে প্রথম নৌকাটি ডুবে যায় যেখানে মাত্র ৬৬ জন বেঁচে যায়। দ্বিতীয় নৌকাটিতে ছিল ২৪৭ জন রোহিঙ্গা, কক্সবাজার শিবিরের শরণার্থী এবং রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিরা। দ্বিতীয় নৌকাটি ১০ই মে ডুবে যায়, যেখানে মাত্র ২১ জন বেঁচে যায়। ইউএনএইচসিআর বেঁচে যাওয়াদের সম্পর্কে বিস্তারিত যাচাই করার জন্য কাজ করছে। তৃতীয় নৌকাটি প্রায় ১৮৮ জন রোহিঙ্গাকে বহন করে ১৪ই মে মিয়ানমার ছেড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সমুদ্রে দুর্দশাগ্রস্থদের জীবন বাঁচানো এবং উদ্ধার করা একটি মানবিক বাধ্যবাধকতা এবং আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক আইনের অধীনে একটি দীর্ঘস্থায়ী কর্তব্য। ভবিষ্যতের ট্র্যাজেডি রোধে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ইউএনএইচসিআর এই অঞ্চলের কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয়দানকারী দেশগুলোর সাথে সংহতি প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ এবং নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের জন্য অনুকূল না হওয়া পর্যন্ত, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবন রক্ষাকারী সহায়তা প্রদানের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে বলে জানিয়েছে।
বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুত শরণার্থী এবং তাদের আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের জীবন স্থিতিশীল করার জন্য ২০২৫ সালে ইউএনএইচসিআরের ৩৮৩.১ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। এখন পর্যন্ত এই পরিমাণের মাত্র ৩০ শতাংশ পাওয়া গেছে।
ডিবিসি/এমইউএ