বিবিধ

জেলে সম্প্রদায়ের নারীদের অন্তর্ভুক্তিতে সরকারি নীতিমালা সংস্কারের দাবিতে সংলাপ অনুষ্ঠিত

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

ডিবিসি নিউজ

বুধবার ৬ই আগস্ট ২০২৫ ০৩:২০:৪৬ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

বাংলাদেশের মৎস্য খাতে নারীদের অসামান্য অবদান থাকা সত্ত্বেও, অধিকার ও স্বীকৃতির দিক থেকে তারা বরাবরই অবহেলিত। এই বঞ্চনার অবসানের লক্ষ্যে এবং জেলে সম্প্রদায়ের নারীদের অধিকার নিশ্চিত করতে সরকারি নীতিমালা সংস্কারের দাবিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গত ৩১শে জুলাই ঢাকার গুলশানের হোটেল বেঙ্গল ব্লু বেরিতে এই সংলাপের আয়োজন করে সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্স স্টাডিজ (সিএনআরএস)। অক্সফাম বাংলাদেশের কারিগরি সহায়তা এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সহ-অর্থায়নে পরিচালিত "এমপাওয়ারিং উইমেন থ্রু সিভিল সোসাইটি অ্যাক্টরস ইন বাংলাদেশ (ই ডব্লিউ সি এস এ)" প্রকল্পের অধীনে 'নারী মৎস্যজীবীদের ক্ষমতায়ন ও টেকসই মৎস্যখাতের পথে অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি' শীর্ষক এই সংলাপ আয়োজিত হয়।

 

সংলাপে মৎস্যজীবী নারী, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, এনজিও, মৎস্যজীবী সমিতি এবং বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য অধিদপ্তর, মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউট ও মহিলা অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন।

 

আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল নারী মৎস্যজীবীদের জন্য সরকারের বিশেষ পরিচয়পত্র "জেলে কার্ড" প্রদানের বিষয়টি। এই কার্ডের মাধ্যমে মৎস্যজীবীরা বিভিন্ন সরকারি ভর্তুকি ও সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। কিন্তু নারী মৎস্যজীবীদের বৃহদাংশই এই কার্ড থেকে বঞ্চিত হওয়ায় তারা কোনো প্রকার সরকারি সহায়তা পান না, যা তাদের জীবনকে চরম অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দেয়।

 

অনুষ্ঠানে 'জাতীয় মৎস্যনীতি ২০২৫ (খসড়া)' উপস্থাপন করা হয় এবং অংশগ্রহণকারীরা নারী মৎস্যজীবীদের পরিচয়পত্র প্রদান, ভর্তুকি বিতরণে জেন্ডার সংবেদনশীলতা আনয়ন এবং নীতিনির্ধারণে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।

 

মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ শাখার উপপরিচালক জনাব বরুন চন্দ্র বিশ্বাস জানান, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকল মৎস্যজীবীকে জেলে কার্ড প্রদানের জন্য মৎস্য অধিদপ্তর থেকে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তিনি বিশেষভাবে ভ্রাম্যমাণ বা নৌকাবাসী জেলে, যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তাদেরও এই কার্ডের আওতায় আনার অনুরোধ জানিয়েছেন এবং এই প্রক্রিয়া দ্রুত বাস্তবায়নে সিএনআরএস-এর সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করেন।

 

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক জেসমিন আরা জেলে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

 

অন্যান্য বক্তারাও মৎস্যজীবী হিসেবে নারী-পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা, মৎস্যজীবী সমিতিতে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে এলাকাভিত্তিক নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানান।

 

আলোচনা শেষে, নারী মৎস্যজীবীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকারের পাশাপাশি সকল অংশীজনের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। জেলে সম্প্রদায়ের নারীদের একটি নিরাপদ, সম্মানজনক ও স্বাবলম্বী জীবন নিশ্চিত করতে ই ডব্লিউ সি এস এ প্রকল্পের চলমান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই সংলাপ এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

 

ডিবিসি/এএমটি

আরও পড়ুন