বাংলাদেশ, জাতীয়

জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে দলগুলোর ঐকমত্য

ডেস্ক নিউজ

ডিবিসি নিউজ

বৃহঃস্পতিবার ১০ই জুলাই ২০২৫ ০৯:৩৪:২৭ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের মধ্য থেকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের নীতিগত বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছেছে। তবে নিয়োগটি সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ একজন নাকি জ্যেষ্ঠতম দুজনের মধ্যে থেকে হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া ভবিষ্যতে একটি বিতর্কমুক্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রাখার বিষয়ে দলগুলো একমত হলেও এর গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ই জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ১১তম দিনের বৈঠক শেষে বিকেলে এই অগ্রগতির কথা জানানো হয়।

 

বৈঠক শেষে ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে দুটি বিষয়ে দলগুলো একমত হয়েছে। প্রথমত, সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ বিদ্যমান থাকবে। দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রপতি আপিল বিভাগের বিচারপতিদের মধ্য থেকেই প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেবেন, যা আগে নির্দিষ্ট ছিল না। তবে তিনি সবচেয়ে সিনিয়র হবেন, নাকি সিনিয়র দুজনের মধ্যে একজন হবেন, তা বিবেচনায় রাখা হয়েছে।

 

তিনি আরও জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা যেন ভবিষ্যতে কোনো বিতর্কের জন্ম না দেয় এবং জরুরি অবস্থার বিধান যাতে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত না হয়, সে বিষয়েও দলগুলো একমত হয়েছে। জুলাই সনদের অগ্রগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আলোচনা যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে এই মাসের মধ্যেই সনদ প্রস্তুত করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়।

 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ দুইজন বিচারপতি থেকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে আমরা একমত। তবে বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত নয়, এ নিয়ে আবারও আলোচনা হবে। তিনি আরও যোগ করেন, বিচার বিভাগকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রভাবের বাইরে রাখতে সবাই একমত হয়েছে এবং বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা চলছে।

 

আলোচনায় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী বিচার বিভাগের পৃথকীকরণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, আপিল বিভাগের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ বিচারপতি প্রধান বিচারপতি হবেন, নাকি দুজনের মধ্যে থেকে একজন হবেন, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। রাষ্ট্রের সব অঙ্গনে ভারসাম্য থাকা জরুরি।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক গত ১৬ বছরে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগের সমালোচনা করে বলেন, এসব প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক বিবেচনার ঊর্ধ্বে উঠে নিয়োগ দিতে হবে। আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম দুজনের মধ্যে একজনকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে আমরা একমত।

 

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স জানান, ঐকমত্যের স্বার্থে তারা জ্যেষ্ঠ দুজন বিচারপতির মধ্যে একজনকে নিয়োগের প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেন, একটি নীতিমালার ভিত্তিতে যোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে হবে।

 

আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ একটি নতুন প্রস্তাব তুলে ধরে বলেন, প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিরোধীদলের সঙ্গে আলোচনা করার বাধ্যবাধকতা থাকা উচিত।

 

দলগুলোর মধ্যে আলোচনা অব্যাহত থাকবে এবং পরবর্তী বৈঠকে অমীমাংসিত বিষয়গুলো চূড়ান্ত করার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা।

 

ডিবিসি/এএমটি

আরও পড়ুন