ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহিদ শরিফ ওসমান হাদির স্মৃতিবিজড়িত ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার লঞ্চঘাটের নাম পরিবর্তন করে তার নামে নামকরণ করা হয়েছে। জন্মস্থানের মাটি ও মানুষের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এই লঞ্চঘাটটি এখন থেকে ‘শহিদ শরীফ ওসমান বিন হাদি’ লঞ্চ টার্মিনাল হিসেবে পরিচিত হবে।
বৃহস্পতিবার (২৫শে ডিসেম্বর) বিকেলে বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, নলছিটি শহিদ ওসমান হাদির জন্মস্থান। তার শৈশব, বেড়ে ওঠা ও জীবনসংগ্রামের সঙ্গে এই লঞ্চঘাট এলাকার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। সেই স্মৃতিকে ধরে রাখতেই টার্মিনালের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে টার্মিনালটির সংস্কার ও রঙের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী রবিবার নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন নবনামকৃত এই টার্মিনাল পরিদর্শনে আসবেন।
লঞ্চঘাট এলাকাটি ওসমান হাদির জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঘাট থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরত্বেই তার পৈতৃক বাড়ি। শৈশবে নদীর ধারে দাঁড়িয়ে মানুষের আসা-যাওয়া দেখা আর লঞ্চের ভিড়ে সময় কাটানো হাদির বেড়ে ওঠার সাক্ষী হয়ে আছে এই স্থানটি। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও প্রতিবেশীরা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।
ব্যবসায়ী রব হাওলাদার ও শাহাদাত আলম ফকির জানান, হাদিকে তারা ছোটবেলা থেকেই দেখেছেন। তার নামে ঘাটের নামকরণ হওয়ায় এলাকাবাসী একইসঙ্গে গর্বিত ও আবেগাপ্লুত। প্রতিবেশী বেলায়েত হোসেন নান্নু বলেন, এই নামকরণের মধ্য দিয়ে হাদি তার নিজ এলাকায় ও মানুষের মাঝে চিরদিন বেঁচে থাকবেন।
উল্লেখ্য, গত ১২ই ডিসেম্বর দুপুরে হত্যার উদ্দেশ্যে ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ই ডিসেম্বর তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয় এবং সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ই ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে তার মরদেহ দেশে এনে বিপুল মানুষের উপস্থিতিতে জানাজা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে তাকে দাফন করা হয়।
ডিবিসি/আরএসএল