টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে আল-কারীম দারুর উলুম আজাদী মাদ্রাসার ১১ বছর বয়সী এক ছাত্রকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষক ওয়ালী উল্লাহকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জামালপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ওয়ালী উল্লাহ পাবনার চাটমোহর উপজেলার ধানবিলা গ্রামের মাওলানা মোহাম্মদ জহুরুল ইসলামের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষক ওয়ালী উল্লাহ বিভিন্ন অজুহাতে গভীর রাতে ঘুমন্ত ছাত্রদের তার কক্ষে ডেকে নিয়ে যেতেন। নির্যাতনের শিকার শিশুটিকেও একাধিকবার তার কক্ষে ডেকে নিয়ে যৌন নিপীড়ন করেন এবং সর্বশেষ গত ২৪ জুলাই তাকে ধর্ষণ করেন।
ঘটনাটি জানাজানি হলে, জামিয়া আরফান আলী মহিলা মাদ্রাসার পরিচালক ও ইসলামী আন্দোলন ভূঞাপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মুফতি আসাদুজ্জামান শামীমের নেতৃত্বে একটি প্রভাবশালী মহল সালিসি বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। তারা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এবং পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে একটি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ভুক্তভোগীর অভিভাবকের স্বাক্ষর নেয়। এমনকি, এই ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে জনরোষ সৃষ্টির হুমকিও দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মাইকিং করে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয়। অবশেষে, পুলিশের তৎপরতায় বৃহস্পতিবার রাতে অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়।
ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ. কে. এম. রেজাউল করিম জানান, গ্রেপ্তারকৃত ওয়ালী উল্লাহ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে যৌন নির্যাতনের কথা স্বীকার করেছেন। তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে। তিনি আরও বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক মোবাইল ফোন ব্যবহার না করে স্থান পরিবর্তন করায় তাকে ধরতে বেগ পেতে হয়েছে। ওসি আরও হুঁশিয়ারি দেন যে, ধর্ষণ একটি অ-আপোষযোগ্য অপরাধ হওয়ায় সালিশি বৈঠকে জড়িতদের বিরুদ্ধেও তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নির্যাতিত শিশুর পরিবার ও এলাকাবাসী এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে।
ডিবিসি/জেআরওয়াই