বাংলাদেশ, জেলার সংবাদ

টিউলিপ দেখতে তেতুঁলিয়ায় ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

ডিবিসি নিউজ

মঙ্গলবার ১৪ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৩:৪৪:৪২ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় টিউলিপ বাগান দেখতে গিয়েছেন ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত এইচ ই উইনি ইস্ট্রাপ পিটারসেন।

আজ সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তেঁতুলিয়ার দর্জিপাড়ায় টিউলিপ বাগান পরিদর্শন করেন তিনি। এ সময় টিউলিপ ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে বরণ করেন ফুল চাষীরা।

টিউলিপ বাগান প্রবেশ করে বাংলাদেশের এক সীমান্তের অঞ্চলে এ রকম নেদারল্যান্ডের নান্দনিক টিউলিপ ফুলের চাষ হতে পারে তা দেখে তাঁরা অভিভূত হন। ঘুরে দেখেন পুরো বাগান। টিউলিপ ফুলের একটি জাতের নাম ডেনমার্ক জানতে পেরে রাষ্ট্রদূত আনন্দিত হন। ছবি তোলেন টিউলিপ কৃষাণীদের সাথে। এ সময় রাষ্ট্রদূত টিউলিপ চাষের সাথে সম্পৃক্ত প্রান্তিক ২০ জন নারী কৃষাণীর সাথে কথা বলেন। টিউলিপ চাষ বৃদ্ধি, ও আগামী পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন।

এছাড়া টিউলিপ ফুল বিক্রির টাকা কৃষাণীদের সঞ্চয়ের পরামর্শ দেন তিনি। পরে ইএসডিও ও পিকেএসএপের উদ্যোগ, পরিশ্রম ও সাফল্যের প্রশংসা করেন রাষ্ট্রদূত উইনি এস্ট্রাপ পিটারসেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (ইফাদ) বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. আর্নো হ্যামিলার্স, ইফাদের অনুষ্ঠান কর্মকর্তা মেরিয়েল জিমার মেন, আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (ইফাদ) পরামর্শক দেওয়ান আলমগীর, পিকেএসএফের সিনিয়র মহাব্যবস্থাপক (কার্যক্রম) ড. আকন্দ মো. রফিকুল ইসলাম, পিকেএসএফের  ভ্যালুচেইন ষ্পেশালিস্ট মো. রাফিজুল ইসলাম মন্ডল, ইএসডিওর নির্বাহী পরিচালক ড. মুহম্মদ শহীদ উজ জামান, তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহাগ চন্দ্র সাহা প্রমুখ।

 

রাষ্ট্রদূত এইচ ই উইনি ইস্ট্রাপ পিটারসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো জায়গায় এখানে টিউলিপের চাষ হচ্ছে, তা দেখে আমি খুবই আনন্দিত। বিশেষত এ ফুলগুলো শীত প্রধান দেশগুলোতে হয়ে থাকে। সেখানে বাংলাদেশের মতো এক সীমান্ত এলাকায় যারা এ ফুল চাষ করছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। তারা যেন একতাবদ্ধ থাকে, যাতে তারা এ কাজ আরও ছড়িয়ে দিতে পারে। ভবিষ্যতে ভালো কিছু করতে পারবেন। বিশেষ করে পিকেএসএফ ও ইএসডিওকে এ ফুল চাষের উদ্যোগ গ্রহণে বিশেষ ধন্যবাদ জানাই।’

ড. আর্নো হ্যামিলার্স বলেন, বাংলাদেশের এক সীমান্ত এলাকায় তেঁতুলিয়ার দর্জিপাড়ায় টিউলিপের বাগানে এসে খুব অভিভূত হয়েছি। যেন আমার নিজের দেশের চিত্র দেখতে পারছি। এখানে এসে খুব ভালো লেগেছে। এ সময় তিনি এখানে টিউলিপ চাষের সাথে সম্পৃক্ত নারী চাষিদের সাথে কথা বলেন ও তাদেরকে একত্রে থেকে কাজ করতে বলেন। টিউলিপের পাশাপাশি সারা বছর যাতে অন্যান্য আবাদ বিষয়ে জানতে চান। তিনি জানান, এ ফুল বিশেষ উৎসবের দিনগুলাতে এ টিউলিপ হতে পারে ভিন্ন আনন্দ। বাংলাদেশের সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের বন্ধুত্ব অনেক দিনের। টিউলিপ ঘিরে দুই দেশের সম্পর্ক আরও গাঢ় হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

ইএসডিওর নির্বাহী পরিচালক ড. শহীদ উজজ্জামান বলেন, বিশেষত ভৌগলিক অবস্থানগত দিক থেকে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া পর্যটনে অপার সম্ভাবনাময় এলাকা। এখানে আমরা ইকো ট্যুরিজম গড়ে তুলতে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এবং ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্টের (ইফাদ) সহযোগিতায় সীমান্ত গ্রাম দর্জিপাড়ায় নেদারল্যান্ডের টিউলিপ ফুল চাষের পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করেছি। আমরা বাণিজ্যিকভাবে ২০ জন নারী কৃষাণীর হাতে ১০ প্রজাতির বাহারি রঙের ফুল নেদারল্যান্ডস টিউলিপ ফুটিয়েছি। এসব রঙের ফুলের সৌন্দর্য দৃষ্টি জুড়াচ্ছে দর্শনার্থীদের। দেশ বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকেরা এসে বাহারি রঙের টিউলিপ ফুল দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন। কেউ সেলফি তুলছেন। আবার কেউ ফুল কিনছেন।

উল্লেখ্য, গত ১০ই জানুয়ারী ২০ জন চাষি বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ইএসডিও সহযোগিতায় এবং পিকেএসএফের অর্থায়নে ২০০ শতক জমিতে ১০ জাতের ১ লাখ টিউলিপ ফুলের চারা রোপণ করেন। এতে ব্যয় হয় ৮০ লাখ টাকা। বাজার ভাল থাকলে দেড় থেকে দুই কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা চাষিদের।

আরও পড়ুন