জন্মের পর কোনও একটি ঘটনায় বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল যমজ বোনদের। মাঝে কেটে গেছে প্রায় ১৯টি বসন্ত। একই শহরে বাস করলেও কেউ কাউকে চিনতে পারেননি। অবশেষে সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে পুনর্মিলন হলো দুই বোনের।
পূর্ব ইউরোপের দেশ জর্জিয়ায় ঘটনাটি ঘটেছে।
১৯ বছর পর জর্জিয়ার বাসিন্দা যমজ বোনদের পুনর্মিলনের খবরটি একটি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুই বোনের নাম Amy Khvitia এবং Ano Sartania। ২০০২ সালে জন্ম হয়েছিল অ্যামি ও অ্যানোর। জন্মের পরেই তাদের মা আজা শোনি শারীরিক জটিলতার কারণে কোমায় চলে গিয়েছিলেন।
এই সময় তাদের বাবা গোচা গখারিয়া দুই সন্তানকে দুই পরিবারের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। সেই থেকে দুই বোন আলাদা আলাদা পরিবারে মানুষ হতে থাকে। বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে আরও জানিয়েছে, জর্জিয়ার তিবিলিসিতে বড় হয়েছেন অ্যানো এবং অ্যামি বেড়ে উঠেছিলেন জুগদিদিতে। কিন্তু একে অপরের অস্তিত্ব সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ ছিলেন তারা।
১১ বছর বয়সে একটি নাচের আসরে দু’জন অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেই সময়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শকরা অ্যামি ও অ্যানোর মধ্যে সাদৃশ্য লক্ষ্য করে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। সেই সময় ঘটনায় রহস্যভেদ হয়নি।
অ্যামি ও অ্যানোর বয়স তখন ১২ বছর। একদিন জর্জিয়ার জনপ্রিয় টিভি শো গট ট্যালেন্ট দেখতে বসেছিলেন অ্যামি। শোতে নাচ চলাকালীন এক তরুণীকে হোঁচট খেয়ে পড়ে যেতে দেখেছিলেন। পড়ে যাওয়া তরুণী হুবহু তার মতো দেখতে। এতে অ্যামির মনে খটকা লাগলেও তা প্রকাশ করেননি পরিবারের কাছে।
এদিকে, এই ঘটনার কয়েকদিন পরে সোশ্যাল মিডিয়া TikTok-এ একটি ভিডিও নজরে আসে অ্যানোর। ভিডিওটিতে একজন তরুণীকে বোনের খোঁজ করতে দেখছিলেন তিনি। তরুণীকে দেখতে ছিলেন ঠিক অ্যানোর মতো। এরপরেই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই নিজেদের চিনতে পেরেছিলেন অ্যানি এবং অ্যানো। ১৯ বছর পর পুনর্মিলনের সময় আবেগ চেপে রাখতে পারেননি দুই বোন।
শিশু জন্মের পর পাচার ও বিক্রির ঘটনা বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে ২০০৫ সালে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল জর্জিয়ার সরকার। মূলত হাসপাতালগুলিকে কেন্দ্র করে এই পাচার ও বিক্রির রমরমা বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল। জন্মের পর অ্যামি ও অ্যানোও পাচারের শিকার হয়েছিলেন।
ডিবিসি/আরপিকে