আন্তর্জাতিক, ইউরোপ

টিকটক ভিডিওতে হারানোর ১৯ বছর পর খোঁজ পেলেন যমজ বোনের

ডেস্ক নিউজ

ডিবিসি নিউজ

শুক্রবার ২৬শে জানুয়ারী ২০২৪ ১০:৩৪:২৫ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

সিনেমার কাহিনির সঙ্গে মিলে যাবে পূর্ব ইউরোপের দেশ জর্জিয়ার দুই বোনের গল্প। জন্মের সময় আলাদা হয়ে দীর্ঘদিন পর তাদের দেখা হওয়া সিনেমার গল্প থেকে কোন অংশে কম নয়। যমজ বোন অ্যামি খাভিশা ও অ্যানো সারতানিয়া আলাদা হয় গিয়েছিলেন জন্মের পরপরই। জর্জিয়ায় মাত্র মাইলখানেক দূরে তাদের বাড়ি। অবশেষে ভাইরাল হওয়া এক টিকটক ভিডিওতে তারা একজন আরেকজনকে খুঁজে পেয়েছেন।

শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদেনে দুই বোনের এই গল্প তুলে এনেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অ্যামি-অ্যানোর জন্মদাত্রী মা আজা শোনি ২০০২ সালে জন্মগ্রহণজনিত জটিলতায় চলে যান কোমায়। সে সময় এক ধ্বংসাত্মক সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তাঁর স্বামী গোচা গাখারিয়া। অ্যামি ও অ্যানোকে দুটি আলাদা পরিবারে বিক্রি করে দেন তিনি।

তাদের প্রতিবেদনে জর্জিয়ার এক গুরুতর সমস্যাও সামনে এসেছে। গত কয়েক দশক ধরেই দেশটির হাসপাতাল থেকে উদ্বেগজনকসংখ্যক শিশু চুরি হওয়ার পর বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। এর অনেক ঘটনাই এখনো অমীমাংসিতই রয়ে গেছে।

অ্যামি আর অ্যানোর নিজেদের খুঁজে পাওয়ার যাত্রা শুরু হয়েছে তাদের ১২ বছর বয়সে। অ্যামি তার প্রিয় টিভি শো ‘জর্জিয়াস গট ট্যালেন্ট’ দেখছিলেন মন দিয়ে। একটি মেয়ে নাচতে গিয়ে হোঁচট খেল। অ্যামি দেখল সেই মেয়েটির সঙ্গে তার চেহারার অদ্ভুত সাদৃশ্য। অ্যামি তখন জানত না যে, নাচতে থাকা মেয়েটিই তার বোন।

তিবিলিসিতে বড় হয়েছেন অ্যানো। আর অ্যামি জুগদিদিতে। দুজনের কেউই একে অপরের অস্তিত্ব সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। ১১ বছর বয়সে একই নাচের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন তারা। দর্শকের চোখেও পড়েছিল তাদের অবিশ্বাস্য সাদৃশ্য। তবু সত্য অধরাই থেকে যায়।

টিকটক ভিডিওটির পর তাদের দেখা হওয়া পর্যন্ত দুই বোনের জীবন চলতে থাকে সমান্তরাল পথে। ২০২১ সালে এক বন্ধুর পাঠানো টিকটক ভিডিওতে অ্যানো দেখতে পান নীল চুলের এক মেয়েকে, যে দেখতে অবিকল তার মতোই। অ্যানো নিজের চুল নীল করে ফেলেছে কেন- বন্ধুর প্রশ্নের জবাবে অ্যানো বলেন, মেয়েটি তিনি নন।

কিন্তু মেয়েটির পরিচয় জানা তখন জরুরি হয়ে পড়েছে অ্যানোর জন্য। ভিডিওটি সামাজিক প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকে পোস্ট করেন তিনি। তাতেই কাজ হয়। ভিডিওর সেই মেয়ে অ্যামির ফোন নম্বর পেয়ে যান অ্যানো। এরপর তাদের যোগাযোগ হয়। তারা প্রথমবারের মতো জানতে পারেন সেই সত্য যে, তারা দুজন যমজ বোন। জর্জিয়ার হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া হাজার হাজার শিশুর মধ্যে তারাও ছিলেন।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুসার, ২০২১ সালে জর্জিয়ার রাজধানী তিবিলিসির রুস্তাভেলি সেতুতে দেখা হয় দুই বোনের। ১৯ বছর আগে তাদের বিচ্ছেদের পর প্রথমবারের মতো একত্র হন অ্যামি ও অ্যানো।

বিবিসি জানিয়েছে, যমজ দুই বোন তাদের দত্তক নেয়া পরিবারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চান। তাদের উভয়েরই পালক মা জানান, তারা যখন বাচ্চাদের দত্তক নিয়েছিলেন তখন বলা হয়েছিল তারা ‘অবাঞ্চিত’ শিশু। টাকার বিনিময়ে তারা ডাক্তারের কাছ থেকে অ্যামি ও অ্যানোকে কিনে নেন। তবে তারা কেউই জানতেন না তাদের মেয়েদের যমজ বোন আছে।

ডিবিসি/ এসএসএস

আরও পড়ুন