ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেলেও ভোটের জটিল প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
দীর্ঘ সময় লাগার আশঙ্কায় ভোটাররা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাদের পছন্দের সব প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আগামীকাল সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলবে।
এবারের নির্বাচনে একজন ভোটারকে কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৪১টি ভোট দিতে হবে। এর জন্য ব্যবহার করা হবে সাত পৃষ্ঠার একটি ওএমআর ফরম। হিসেব অনুযায়ী, প্রতিটি ভোট দেওয়ার জন্য একজন শিক্ষার্থী গড়ে মাত্র ১২ সেকেন্ড সময় পাবেন। কেন্দ্রীয় সংসদে ২৮টি এবং হল সংসদে ১৩টি পদে ভোট দিতে একজন ভোটারের ৮ থেকে ১০ মিনিট সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার প্রায় ৪০ হাজার, যার মধ্যে ১৮ হাজার ৯৫৯ জন ছাত্রী এবং ২০ হাজার ৯১৫ জন ছাত্র। কেন্দ্রীয় সংসদের ২৮টি পদের জন্য লড়ছেন ৪৭১ জন প্রার্থী এবং ১৮টি হল সংসদের ১৩টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১ হাজার ৩৫ জন। বিপুল সংখ্যক ভোটারের জন্য ভোটকেন্দ্র থাকছে মাত্র আটটি, যেখানে বুথের সংখ্যা ৮১০টি।
ভোটকেন্দ্রগুলো বিভিন্ন হলের জন্য ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। কার্জন হল কেন্দ্রে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল, অমর একুশে হল ও ফজলুল হক মুসলিম হলের ভোটাররা ভোট দেবেন। শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে জগন্নাথ হল, শহিদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের এবং সিনেট ভবন কেন্দ্রে স্যার এ এফ রহমান হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ও বিজয় একাত্তর হলের শিক্ষার্থীরা ভোট দেবেন। এছাড়া উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে সূর্যসেন হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও কবি জসীম উদদীন হলের ভোটারদের জন্য ভোটগ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ছাত্রীদের জন্য চারটি আলাদা কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। টিএসসিতে রোকেয়া হলের এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব কেন্দ্রে বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ছাত্রীরা ভোট দেবেন। ভূতত্ত্ব বিভাগ কেন্দ্র ও ইউ ল্যাব স্কুল অ্যান্ড কলেজে যথাক্রমে কবি সুফিয়া কামাল হল ও শামসুন নাহার হলের ছাত্রীদের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
সাত পৃষ্ঠার ওএমআর ফর্মে পদের নাম, ব্যালট নম্বর, প্রার্থীর নাম এবং ভোট দেওয়ার জন্য নির্ধারিত ঘর থাকবে। আটটি কেন্দ্রে ১৪টি মেশিনের মাধ্যমে ভোট গণনা করা হবে এবং চূড়ান্ত ফলাফল নবাব নওয়াব আলী সিনেট ভবন থেকে ঘোষণা করা হবে। নিজেদের অধিকার রক্ষায় দীর্ঘ ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনে ভোট দিতে প্রস্তুত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, যার মাধ্যমে গঠিত হতে যাচ্ছে ৩৮তম ডাকসু।
ডিবিসি/ এইচএপি