১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল প্রায় ৩ হাজারের বেশি যাত্রী নিয়ে সাউদাম্পটন থেকে আমেরিকার নিউ ইয়র্কের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে সেই সময়ের বিলাসবহুল জাহাজ আর.এম.এস টাইটানিক।
যাত্রার ২য় দিনে (১৪ এপ্রিল ১৯১২) আটলান্টিক সাগরে থাকা হিমশৈলের সাথে ধাক্কা লেগে ডুবে যায় এই জাহাজটি। মোট যাত্রী ছিল ২২২৪ জন এবং মৃত্যু হয় ১৫০৪ জন যাত্রীর। ঝাহাজে থাকা লাইফবোটের সাহায্যে মাত্র ৭০৫ জন যাত্রীকে বাচানো সম্ভব হয় যার বেশিরভাগই ছিল নারী ও শিশু।
এই দুর্ঘটনা থেকে যারা জীবিত ফিরে আসেন তাদের কেউই আজ বেচে নেই। ডুবে যায় টাইটানিক থেকে বেঁচে ফেরা সর্বশেষ যাত্রী ২০০৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
বলা হতো টাইটানিক জাহাজটি কখনো ডুববে না। কারণ এই জাহাজটিতে ছিল ১৬টি পানি নিরোধক বগি। যদি কোন কারণে জাহাজটি কোন দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয় তাহলে শুধু ৪ টি বগি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং বাকি বগিগুলো অক্ষত থাকবে যেটি টাইটানিককে পানিতে ভাসিয়ে রাখতে সাহায্য করবে। তবে সব ভবিষ্যৎবাণীকে ভুল প্রমাণিত করে প্রথম যাত্রাতেই ডুবে যায় জাহাজটি।
টাইটানিক থেকে যারা বেচে ফেরে তাদের সবাই বেশ বিখ্যাত ছিলেন। প্রথম শ্রেণীর যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন মলি ব্রাউন, জে ব্রুস ইজমে, কসমো ডাফ গর্ডোন, লুসি ডাফ গর্ডোন, মিলভিনা ডিন, ইভা হার্টসহ আরো অনেকে।
মিলভিনা ডিন:
ডিন ছিলেন সর্বশেষ জীবিত যাত্রী যিনি ২০০৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন ৯৭ বছর বয়সে। টাইটানিক জাহাজটি যখন ডুবে যায় তখন ডিন মাত্র ২ মাস বয়সী ছিলেন।
মলি ব্রাউন:
তিনি একমাত্র নারী যাত্রী ছিলেন যিনি রীতিমতো ঝগড়া করেছিলেন জাহাজের সদস্যদের সঙ্গে যেন জাহাজ দুর্ঘটনার স্থানে পাঠানোর জন্য। তিনি ৬ নং লাইফবোটে ছিলেন।
এলসি বোয়ারম্যান:
টাইটানিক জাহাজ থেকে জীবিত ফিরে এসে তিনি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নার্স হিসেবে কাজ করেন।
ইভা হার্ট:
টাইটানিক দুর্ঘটনার সময় ইভার বয়স ছিল মাত্র ৭ বছর। পরবর্তীতে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, যদি জাহাজটিতে পর্যাপ্ত লাইফবোট থাকতো তাহলে এতগুলো প্রাণহাণী হতো না। ইভা ১৯৬৬ সালে ৬১ বছর বয়মে মৃত্যুবরণ করেন।
টাইটানিক জাহাজটি এখনো পানির নিচে রয়েছে বছরের পর বছর ধরে। অনেক চেষ্টা করেও এটা পানির নিচ থেকে তোলা সম্ভব হয়নি।