বাংলাদেশ, জাতীয়

ঢাকায় ইরানের ইসলামী বিপ্লবের বিজয় বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা

ডেস্ক নিউজ

ডিবিসি নিউজ

মঙ্গলবার ১৩ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:৩২:৩৩ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

ইরানের ইসলামী বিপ্লবের ৪৫ তম বিজয় বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ ভবনের মোজাফ্ফর আহমেদ চৌধুরী অডিটরিয়ামে এ আলোচনা সভা  অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক। ‘ইরানের ইসলামী বিপ্লব ও এর নয়া বার্তা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে অবস্থিত ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভূশি ও  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান।

সেমিনারে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান ও ইসলামী ফাউন্ডেশনের গভর্ণর ড. কফিল উদ্দিন সরকার সালেহি। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সিলর সাইয়্যেদ রেজা মির মোহাম্মদী।

আলোচনা সভায় বাংলাদেশে অবস্থিত ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভূশি বলেন, ইমাম খোমেনি ইসলামী বিপ্লবকে নতুন করে তুলে ধরেছেন। আসলে আলোর মূল হল অন্ধকারকে দূর করা। আমরা মুসলমানরা বিশ্বাস করি আমরা অন্ধকার দূর করি। ন্যায়ের মাধ্যমেই অন্ধকার দূর করে সমাজে আলো আনা হয়। পৃথিবীর সকল মানুষ চায় সত্য প্রতিষ্ঠিত হোক এবং আমরা যদি আলো প্রতিষ্ঠা করতে চাই, সত্যকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আল্লাহ কালাম প্রেরণ করে সত্য প্রতিষ্ঠিত করেন এবং আমরা আশা করি আমরা এর মাধ্যমেই পৃথিবীতে সত্য প্রতিষ্ঠিত করব।

অনুষ্ঠানে আল-মুস্তাফা আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আলী আব্বাসী বলেন, ইসলামী বিপ্লব আমাদের চিন্তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। এই বিপ্লবটি কোন রাজনৈতিক ব্যাপার ছিল না, এটা পুরো বিশ্বের কাছে নতুন একটি বার্তা ছিল। এই বিপ্লব প্রতিটি মানুষের হৃদয়ের কথার বার্তা। ইমাম খোমেনি ইরানী বিপ্লবের মাধ্যমে আপনাদের হৃদয়ের কথা বলেছেন এবং ইসলামে বিপ্লব এনেছেন।

তিনি আরও বলেন, এই পৃথিবীতে প্রায় ১০০ টা রাষ্ট্রে তারা (সম্রাজ্য স্থাপনকারী) তাদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠা করে রেখেছে। তারা মানুষের সংস্কৃতি পরিবর্তন করেছে যার ফলে আমাদের সংস্কৃতি আজ বদলে তাদের আওতায় চলে গেছে। দেখা গেছে তারা মানুষের সংস্কৃতির সাথে সাথে পরিবারকেও হরণ করেছে। তারা মানবতা হরণ করেন তবে অন্যের দিকে আঙুল তোলেন মানবতা প্রতিষ্ঠা করার জন্যে। তিনি চার শতাব্দি ধরে ঔপনিবেশিক শক্তির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নতুন করে জেগে উঠার আহ্বান জানান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক বলেন, ইরানের ইসলামী বিপ্লব দুনিয়ার মুসলমানের কাছে, মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে সমগ্র মানবতার কাছে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। ঐতিহাসিক এই বিপ্লবের ৪ দশকের সাফল্য আজ চোখে পড়ার মতো। দশকের পর দশক ধরে চলমান নানা ষড়যন্ত্র ও কঠিন অবরোধের মধ্যেও বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে দ্রুত গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে দেশটি।

মন্ত্রী বলেন, আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইরান বিস্ময়কর অগ্রগতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিভিন্ন উন্নয়ন সূচকে শক্তিশালী অবস্থান বলে দিচ্ছে দেশটি কতটা অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে। শিক্ষা, বিজ্ঞান, উদ্ভাবন, প্রযুক্তিগত উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এখন নেতৃস্থানীয় দেশের তালিকায় রয়েছে ইরান। বিশেষ করে আবিষ্কার ও উদ্ভাবন, ন্যানো প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, সাবমেরিন বা ডুবো জাহাজ শিল্প, এরোস্পেস, সামরিক ও বেসামরিক বিমান শিল্প, কৃত্রিম উপগ্রহ ও মহাকাশ সংক্রান্ত প্রযুক্তি, চিকিৎসা এবং কৃষিতে বিশ্বসেরা ১০টি দেশের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে আজকের ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান।

তিনি আরও বলেন, ইমাম খোমেইনীর (র.) নেতৃত্বে ইরানের ইসলামী বিপ্লব রেজাশাহ পাহলাভির দু:শাসন থেকে দেশটির জনগণকে মুক্ত করেছিল। কিন্তু এই বিপ্লবের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই ষড়যন্ত্র হয়েছে, মিথ্যাচার হয়েছে এবং এখনও এসব ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচার চলছে। তবে শত্রুদের এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সিলর সাইয়েদ রেজা মীর মোহাম্মদি বলেন, ইরানে যখন ইসলামী বিপ্লব হয়, তখন সারা বিশ্বে ব্যাপক হৈচৈ পড়ে যায়। বিশ্বের সংবাদমাধ্যমগুলোর শীর্ষ খবরে স্থান পায় ইরানের ইসলামী বিপ্লব। কারণ এই বিপ্লবে নতুন বার্তা ছিল যা বিশ্বকে আকৃষ্ট করেছে। তা-না হলে এই বিপ্লব সারা বিশ্বে এমন সাড়া জাগাতে পারে না।

ডিবিসি/ এসএসএস

আরও পড়ুন