এবার কারাগারে রেখেই জঙ্গিসহ ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী ও গুরুত্বপূর্ণ মামলার আসামিদের বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। এই লক্ষ্যে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে একটি ডিজিটাল কোর্ট রুম প্রস্তুত করা হয়েছে, যেখানে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম জুম ব্যবহার করে মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
আজ বুধবার (৬ই আগস্ট) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই নতুন বিচারিক ব্যবস্থার কথা জানানো হয়। আদেশে বলা হয়, ঢাকার সিএমএম আদালতের বিভিন্ন আদালতে অনেক চাঞ্চল্যকর ও জনগুরুত্বপূর্ণ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। প্রতিদিন কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি জেলখানা ও কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে প্রচুর সংখ্যক আসামিকে বিভিন্ন বাহনে আদালতে আনা-নেওয়া করতে হয়।
এই আসামিদের মধ্যে জঙ্গি, ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী এবং দুর্নীতি ও রাজনৈতিক সহিংসতার অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিরাও থাকেন। তাদের আদালতে আনা-নেওয়ার সময় প্রায়শই নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়। এছাড়া, অনেক আসামির প্রতি জনগণের তীব্র ক্ষোভ থাকায় আদালত প্রাঙ্গণে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা থাকে, যা সামাল দিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে হিমশিম খেতে হয়।
এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় এবং বিচারিক কার্যক্রমকে গতিশীল করতে ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার আইন, ২০২০’-এর ৫ ধারার ক্ষমতা বলে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশনার আলোকে অডিও-ভিডিও বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে সাক্ষ্য গ্রহণ ও মামলার শুনানির জন্য এই ডিজিটাল কোর্ট রুম প্রস্তুত করা হয়েছে।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ২৮ নম্বর কক্ষটিকে বিশেষভাবে এই ডিজিটাল পদ্ধতির জন্য সুসজ্জিত করা হয়েছে। এখন থেকে জঙ্গি, সন্ত্রাসী এবং দুর্নীতি ও রাজনৈতিক সহিংসতার মতো স্পর্শকাতর মামলার আসামিদের শুনানি এই ভার্চুয়াল কোর্ট রুমেই অনুষ্ঠিত হবে।
এই যুগান্তকারী পদক্ষেপ বাস্তবায়নের জন্য কারা কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সকল মহলকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। এর মাধ্যমে বিচার ব্যবস্থার আধুনিকায়নের পথে বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল এবং আসামিদের আদালতে আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ঝুঁকি কমার পাশাপাশি জনরোষের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিও এড়ানো সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ডিবিসি/এএমটি