বাংলাদেশ, শিক্ষা

ঢাবিতে ভর্তি পরীক্ষা দিলেন মা-ছেলে

ডেস্ক রিপোর্ট

ডিবিসি নিউজ

মঙ্গলবার ১১ই জুলাই ২০২৩ ০১:১৬:২৭ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

সন্তানসম্ভবা আইরিন তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) প্রথম বর্ষে পড়তেন। ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা আর বাচ্চার জন্মের প্রস্তুতি তার সমান তালেই চলছিল। পরীক্ষা শেষ হওয়ার দু’দিন পরই প্রথম সন্তানের মুখ দেখেন তিনি। এবার ২৭ বছর পর একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছেলের গ্র্যাজুয়েশন শেষে মা-ছেলে একসঙ্গে বসেছেন মাস্টার্সের ভর্তি পরীক্ষায়।

মায়ের এই সাহসী পথচলার গল্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন ছেলে মো. মুকসেতুল ইসলাম আলিফ। সেই পোস্টে তাদের শুভকামনা জানাচ্ছেন অসংখ্য ফেসবুক ব্যবহারকারী। যেখানে সন্তানের কথা ভেবে দেশের অসংখ্য মায়েদের প্রতিনিয়ত নিজের ক্যারিয়ারের স্বপ্ন বিসর্জন দিতে হচ্ছে, সেখানে সন্তান আর মায়ের একসঙ্গে স্বপ্ন পূরণের এই পথচলা দেখে অণুপ্রাণিত হচ্ছেন আরও অনেকেই।

গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেওয়া মা জুলিয়া আইরিন জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৯৪-৯৫ সেশনের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ছাত্রী ছিলেন তিনি। এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হতেই বিয়ে হয়েছিল তার। ঢাবিতে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হওয়ার কিছুদিন পরই গর্ভধারণ করেন তিনি। আইরিনের মাত্র বিশ বছর বয়স তখন। ওইটুকু বয়সে যৌথ পরিবারে সংসার, বাচ্চা সামলে পড়ালেখা করাটা কঠিন ছিল আমার জন্য। তবু একবারের জন্যও থেমে থাকিনি।

জুলিয়া আইরিন আরও জানান, ছেলের দেখভাল করতে করতেই নিজের গ্র্যাজুয়েশন আর মাস্টার্স শেষ করেন। এর মাঝে জন্ম হয় আরেক সন্তানের। আইনজীবী শ্বশুরের সহায়তায় এলএলবি কোর্সও সম্পন্ন করেন মা আইরিন। ১৭ বছর যাবত কাজ করছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে। বাচ্চাসহ পড়াশোনা আর ক্যারিয়ারের এই যাত্রায় পরিবার, আর বন্ধুদের সাপোর্ট সবচেয়ে বেশি সাহস জুগিয়েছে। আমি সবসময় ভেবেছি যেভাবেই হোক আমাকে পারতেই হবে। এখন যখন ওই বয়সের জার্নিটার কথা ভাবি, নিজেরই খুব অবাক লাগে, সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে এগিয়ে যাওয়ার সাহসও পাই বলেন তিনি।

ছেলে মো. মুকসেতুল ইসলাম আলিফ জানান, অনেক দিন যাবতই মায়ের স্বপ্ন ছিল আরেকটা মাস্টার্স করার। ঢাবির শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের প্রফেশনাল মাস্টার্সের বিজ্ঞপ্তি দেখে তাই একসঙ্গেই আবেদন করেন দু’জন। আইনজীবী হিসেবে তার মায়ের পেশায় এখানকার কোর্সগুলোও বেশ কাজে লাগবে। মায়ের পরীক্ষাও বেশ ভালো হয়েছে। সপ্তাহ খানেকের ভেতর রেজাল্ট দেবে। আশা করছি দু’জন একসঙ্গেই আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারব।

ডিবিসি/আরপিকে

আরও পড়ুন