ধর্ম, বিবিধ, ইসলাম, লাইফস্টাইল

তারাবির কিছু রাকাত ছুটে গেলে করণীয়

ডেস্ক রিপোর্ট

ডিবিসি নিউজ

রবিবার ২রা এপ্রিল ২০২৩ ০২:২২:২১ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

পবিত্র রমজান মাসে এশার নামাজের পর যে সুন্নতে মুয়াক্কাদা ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা হয়, তাকে তারাবির নামাজ বলে। রমজানের সিয়ামের বিশেষ অনুষঙ্গ তারাবির সালাত। মুমিন বান্দারা যথাযথ গুরুত্ব ও ভাবগাম্ভীর্যতার সঙ্গে তারাবির সালাত আদায় করে থাকেন।

পুরুষদের জন্য তারাবির নামাজ মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে আদায় করা সুন্নত। তারাবির নামাজে কোরআন শরিফ খতম করা সুন্নত আমল। তা সম্ভব না হলে সুরা তারাবি আদায় করা যাবে। নারীদের জন্যও তারাবি সুন্নত। তারাবির নামাজের সময় হলো এশার নামাজের পর থেকে ফজরের নামাজের আগপর্যন্ত।

কোনো পুরুষ বা মহিলা যে কোনো কারণে সন্ধ্যা রাতে তারাবি সম্পূর্ণ বা আংশিক পড়তে না পারলে সেহরির সময় যতক্ষণ থাকে, এর মধ্যে যে কোনো সময় তারাবির নামাজ পড়তে পারবেন। এমনকি বিতর নামাজ পড়ার পরও তারাবির নামাজ পড়া যাবে। এখানে তারাবিসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ মাসায়েল তুলে ধরা হলো-

একবার উঁচু আওয়াজে বিসমিল্লাহ পড়া
খতমে তারাবিতে কোনো একটি সুরার শুরুতে উঁচু আওয়াজে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ তিলাওয়াত করতে হবে। এর কারণ হলো, ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ পবিত্র কোরআনের স্বতন্ত্র একটি আয়াত, যা দুই সুরার মাঝে পার্থক্য করার জন্য আল্লাহ তাআলা অবতীর্ণ করেছেন। তাই পুরো কোরআন খতম করার জন্য কোনো একটি সুরার শুরুতে আয়াতটি উঁচু আওয়াজে তিলাওয়াত করতে হয়। অন্যথায় বিসমিল্লাহ না শোনার কারণে মুসল্লিদের খতম অপূর্ণ থেকে যায়। এ ছাড়া ইমামের জন্য সব নামাজেই সুরা ফাতিহা এবং সব সুরার শুরুতে নিচু স্বরে বিসমিল্লাহ বলা মুস্তাহাব। (ইমদাদুল ফাতাওয়া: ১ / ৩২৮)

সুরা ইখলাস একবারই পড়া
আমাদের দেশে খতমে তারাবিতে তিনবার সুরা ইখলাস পড়ার রীতি আছে। তবে ইসলামি শরিয়তে এমন কোনো বিধান নেই। সাহাবা-তাবেয়িন থেকেও এমন কোনো আমলের প্রমাণ নেই। আলিমগণ এই আমলকে অপছন্দ করেছেন। সুতরাং তারাবিতে কোরআন খতমের সময় সুরা ইখলাস তিনবার পড়ার প্রচলনটি ইসলামের দৃষ্টিতে সঠিক নয়। তাই অন্য সুরার মতো সুরা ইখলাসও একবারই তিলাওয়াত করা উচিত। 

কয়েক রাকাত ছুটে গেলে
কোনো কারণে নির্ধারিত সময়ে তারাবির নামাজের জন্য মসজিদে যেতে পারেননি এমন মুক্তাদির জন্য, এশা ও তারাবির নামাজ আদায়ের নিয়ম হলো, প্রথমে এশার ফরজ ও সুন্নত আদায় করবেন। পরে ইমামের সঙ্গে তারাবির নামাজে অংশ নেবেন। তারাবির জামাত শেষে ইমামের সঙ্গে বিতর নামাজও জামাতে পড়ে নেবেন। এরপর শুরুতে ছুটে যাওয়া তারাবির বাকি নামাজ আদায় করবেন। 

শেষ বৈঠকে দরুদ ও দোয়া পড়তে হবে
অনেক মসজিদে ইমাম তারাবির শেষ বৈঠকে এত অল্প সময় বসে সালাম ফিরিয়ে নেন যে, ওই সময়ে সর্বোচ্চ তাশাহহুদ পড়া যায়। দরুদ শরিফ ও দোয়ায়ে মাসুরা পড়া যায় না। নামাজে এমন তাড়াহুড়া করা ঠিক নয়। অন্য নামাজের মতো তারাবির নামাজের শেষ বৈঠকেও দরুদ ও দোয়ায়ে মাসুরা পড়া সুন্নত। ইমাম-মুক্তাদি সবার জন্যই। তাই ইমামের উচিত শেষ বৈঠকে দোয়া-দরুদ ধীরে পড়া। (আল বাহরুর রায়িক: ২ / ৬৯) 

ভুলে এক সালামে চার রাকাত পড়ে ফেললে
একা একা তারাবির নামাজের সময় ভুলে কেউ যদি একসঙ্গে চার রাকাত আদায় করে, অর্থাৎ দুই রাকাতের পর তাশাহহুদ পড়ে দাঁড়িয়ে আরও দুই রাকাত পড়ে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করে; তাহলে তার নামাজ হয়ে যাবে। এখানে চার রাকাত নামাজ পড়া হয়েছে বলে ধরা হবে।

তবে তারাবির নামাজ ইচ্ছাকৃতভাবে একসঙ্গে চার রাকাত পড়া ঠিক না। -আল বাহরুর রায়েক: ২/৬৭

আরও পড়ুন