বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকা যাওয়ার পথে ভোলায় মো. রেজওয়ান আমিন সিফাত (২৫) নামের এক ছাত্রদল কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
বুধবার (২৪শে ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ৮টার দিকে উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ক্লোজার বাজার এলাকায় নিজ বাড়ির সামনে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত সিফাত ওই এলাকার আলাউদ্দিন হাওলাদারের ছেলে এবং রাজাপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি পদপ্রত্যাশী ছিলেন। পরিবারের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও দীর্ঘদিনের জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে।
নিহতের পিতা মো. আলাউদ্দিন হাওলাদার জানান, তারেক রহমানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সিফাত সন্ধ্যার পর ঢাকার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। বাড়ির সামনের সড়কে আগে থেকেই ওৎ পেতে ছিল তার চাচাতো ভাই হাসিবসহ ৫-৬ জন দুর্বৃত্ত। তারা সিফাতকে একা পেয়ে পথরোধ করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। সিফাতের আর্তচিৎকার শুনে পরিবারের সদস্যরা ছুটে আসলে হামলাকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে পালিয়ে যায়।
এরপর তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে দ্রুত ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরিবার সূত্রে আরও জানা যায়, সিফাতের আপন চাচা সাবেক ইউপি সদস্য মো. হেলাল হাওলাদারের সঙ্গে তাদের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। হেলাল হাওলাদার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় গত ১৭ বছর ধরে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তাদের পরিবারের ওপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন।
এরই ধারাবাহিকতায় হেলাল ও তার তিন ছেলে হাসিব, শাকিব ও শিহাবসহ আরও কয়েকজন মিলে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এই জমি নিয়ে আগে থেকেই আদালতে মামলা চলমান ছিল এবং এর আগেও বেশ কয়েকবার হামলার শিকার হয়েছিলেন তারা।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. জুনায়েদ হোসেন জানান, সিফাতকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায় হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। নিহতের শরীরে অসংখ্য গভীর ক্ষতচিহ্ন পাওয়া গেছে এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণই মৃত্যুর মূল কারণ বলে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে।
এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় জনতা ও নিহতের পরিবার ঘাতকদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভোলা সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জিয়াউদ্দিন বলেন, খবর পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ হাসপাতালে ও ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়েরের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং দোষীদের ধরতে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে।
ডিবিসি/এএমটি