গত সপ্তাহে শেষ হওয়া তীব্র দাবদাহে ইউরোপের ১২টি শহরে তাপপ্রবাহজনিত কারণে প্রায় ২ হাজার ৩০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের বরাতে বুধবার (৯ই জুলাই) এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
গবেষণাটি করা হয়েছে জুলাইয়ের ২ তারিখ পর্যন্ত পূর্ববর্তী ১০ দিনের তথ্যের উপর ভিত্তি করে। এই সময়কালে পশ্চিম ইউরোপের বিশাল অংশজুড়ে চরম তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। স্পেনসহ বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রা ছাড়িয়ে যায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ফ্রান্সে দাবানলের সৃষ্টি হয়।
লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ এবং লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের বিজ্ঞানীরা এই গবেষণাটি পরিচালনা করেন। তাদের মতে, এই সময়ে যে ২ হাজার ৩০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে ১ হাজার ৫০০ মৃত্যুর জন্য অনেকাংশে জলবায়ু পরিবর্তন দায়ী। ইম্পেরিয়াল কলেজের গবেষক ড. বেন ক্লার্ক বলেন, "জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়, এতে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়েছে।"
বার্সেলোনা, মাদ্রিদ, লন্ডন এবং মিলানসহ মোট ১২টি শহরের ওপর এই সমীক্ষা চালানো হয়। গবেষকরা জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই শহরগুলোতে তাপপ্রবাহের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। বিজ্ঞানীরা আরও জানান, তাপপ্রবাহজনিত বেশিরভাগ মৃত্যু আনুষ্ঠানিকভাবে রিপোর্ট করা হয় না এবং কিছু দেশের সরকার এই তথ্য প্রকাশ করে না, তাই তারা ফলাফলের জন্য "পিয়ার রিভিউড মেথড" ব্যবহার করেছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের একটি মাসিক বুলেটিনে বুধবার জানানো হয়েছে, ২০২৪ এবং ২০২৩ সালের পর গত জুন মাসটি ছিল বিশ্বের তৃতীয় উষ্ণতম জুন। আর পশ্চিম ইউরোপ তার ইতিহাসের উষ্ণতম জুন মাস পার করেছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে ইউরোপীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের গবেষকরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিলেন, ২০২২ সালের প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে ইউরোপে প্রায় ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ডিবিসি/এমএআর