আন্তর্জাতিক, ইউরোপ

ত্রাণবাহী জাহাজে ইসরায়েলি হামলায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ তদন্ত শুরু করলো স্পেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ডিবিসি নিউজ

বুধবার ৯ই জুলাই ২০২৫ ০১:২৪:২৩ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

স্পেনের জাতীয় আদালত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এবং বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে একটি ফৌজদারি তদন্ত শুরু করেছে। গতকাল মঙ্গলবার (৮ই জুলাই) এ তদন্ত শুরু হয়েছে। বিশেষত, গত মাসে গাজাগামী একটি মানবিক ত্রাণবাহী জাহাজে ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

স্পেনের পার্লামেন্ট সদস্য জাউমে অ্যাসেনস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম 'এক্স'-এ জানিয়েছেন, এই তদন্তের মূল কেন্দ্রবিন্দু হলো গত ১ জুন 'ম্যাডলিন' নামক জাহাজটিতে ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো অভিযান। জাহাজটি ১২ জন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী এবং বিপুল পরিমাণ মানবিক ত্রাণ নিয়ে গাজার দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক জলসীমায় পৌঁছানোর পরই ইসরায়েলি বাহিনী জাহাজটিকে আটক করে। আটককৃতদের মধ্যে ছিলেন বিশ্বজুড়ে পরিচিত সুইডিশ জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থানবার্গ এবং ফরাসি-ফিলিস্তিনি মানবাধিকার আইনজীবী রিমা হাসান, যা ঘটনাটিকে আন্তর্জাতিক মহলে আরও বেশি আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে আসে।

 

স্পেনের নাগরিক সার্জিও টোরিবিও এবং আরব কজের সাথে সংহতি কমিটি 'সার্বজনীন বিচারব্যবস্থা' নীতির ওপর ভিত্তি করে এই মামলাটি দায়ের করে। অভিযোগে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইসরায়েলি বাহিনী নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ড্রোন ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করেছে এবং তাদের অবৈধভাবে আটক করেছে। অভিযোগে আরও বলা হয়, এটি গাজায় চলমান সংঘাতে ইসরায়েলি বাহিনীর দ্বারা সংঘটিত ধারাবাহিক লঙ্ঘনের একটি বৃহত্তর চিত্রের অংশ।

 

আদালতের রায়ে এই তদন্তের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সঙ্গে নিবিড় সহযোগিতার অনুরোধ জানানো হয়েছে। গাজায় চলমান গণহত্যার প্রেক্ষাপটে এই হামলাকে একটি গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম কোনো দেশ ইসরায়েলি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এমন আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করল, যা আন্তর্জাতিক বিচারব্যবস্থার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে।

 

জাউমে অ্যাসেনস তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, "দায়মুক্তির সংস্কৃতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এটি একটি বিশাল পদক্ষেপ। যখন রাষ্ট্রগুলো তাদের আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা পূরণে ব্যর্থ হয়, তখন নাগরিক সমাজকেই এগিয়ে আসতে হয়। ভয়াবহতার বিরুদ্ধে ন্যায়বিচারকে একটি নৈতিক, আইনি এবং রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে সক্রিয় করার দায়িত্ব আমাদের সকলের।"

 

যদি এই তদন্ত প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে, তবে এটি নেতানিয়াহু এবং অভিযুক্ত অন্যান্য ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের জন্য মারাত্মক পরিণতি বয়ে আনতে পারে। এর ফলে, তাদের ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ হতে পারে এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ঝুঁকিও তৈরি হতে পারে।

 

ডিবিসি/কেএলডি

আরও পড়ুন