ইংরেজি নতুন বর্ষকে বরণ করার লক্ষ্যে প্রতিবছরই বর্ণাঢ্য আয়োজনে পালন করা হয় থার্টি ফার্স্ট নাইট। এ রাতকে ঘিরে পশ্চিমাদের আয়োজনের অন্ত নেই। পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন জমকালো উৎসব পালনের মাধ্যমে ৩১ ডিসেম্বর রাত ১২টা নাগাদ উৎযাপিত হয় এই রাতটি।
থার্টি ফাস্ট নাইট নিয়ে বাংলাদেশি ইসলামি ব্যক্তিত্ব, আলোচক ও সামাজিক সক্রিয় কর্মী শায়খ আহমাদুল্লাহ যুবক ও অভিভাবকদের উদ্দেশে আবেগঘন ভিডিও বার্তা দিয়েছেন।
ভিডিও বার্তায় শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, যে জাতিকে দুইশ বছর গোলাম বানিয়ে রেখেছে ইংরেজরা। আমরা তাদের কালচারকে টাকা-পয়সা দিয়ে আমদানি করে প্রোমোট করি, সেটাকে আমরা ডেভেলপ করি। এর চেয়ে দুর্ভাগ্য আমাদের কী হতে পারে? নতুন বছরের সূচনা যদি আমাদের আনন্দের কারণ হয়, ঠিক একই সময়ে একটি বছরের বিদায়ও হয়ে যাচ্ছে। যুবকদের কাছে আমার প্রশ্ন- তুমি কি বিদায়ী বছরে কেঁদেছ? যদি না কেঁদে থাক তাহলে তোমার বিবেকের কাছে প্রশ্ন কর- যে নতুন বছরের জন্য আনন্দ করছ, ঠিক তার আগ মুহূর্তে একটি বছর চলে গেল তোমার জীবন থেকে; তখন কী তুমি কেঁদেছিলে?
তিনি বলেন, তাহলে যার বিদায়ে আমার কান্নার কারণ হয় না, তাহলে আগমন কেন আমার আনন্দের কারণ হতে পারে?
যুবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই বিজাতীয় অপসংস্কৃতি তোমার না। এটা প্রকৃতি পূজারি পেগানদের কাছ ধার করে খ্রিস্টানরা নিয়েছে। আমাদের আল্লাতায়ালা নিজস্ব সংস্কৃতি দিয়েছেন। আমরা অনেক সমৃদ্ধ; কোনো কিছুর অভাব নেই। আমাদের দুটো উৎসব দেওয়া হয়েছে- ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। এই দুটি উৎসবকে পৃথিবীর সমস্ত উৎসবের চেয়ে অনেক বেশি নির্মল, আনন্দদায়ক, সমৃদ্ধ, পবিত্র। অন্য কোনো উৎসবে এটা পাবে না।
তিনি আরও বলেন, তোমার সমস্ত উৎসবের মধ্যে ভোগ আছে, উচ্ছৃঙ্খলতা আছে, উন্মাদনা আছে, অশ্লীলতা আছে, বেহায়াপনা আছে, অপব্যায় আছে; কিন্তু ঈদুল ফিতর-ঈদুল আজহাতে তুমি এগুলো দেখবে না। ঈদুল ফিতর-ঈদুল আজহার চেতনা কী? চেতনা হলো- তুমি আনন্দদিত হও, গরিবদের মুখে হাসি ফোটাও। ঈদগাহে যাও নামাজ পড়।
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ইসলাম বলছে- তুমি আনন্দ করবা ঈদগাহে গিয়ে, ভালো কথা। তার আগে তুমি গরিবের বাসায় গিয়ে হাসির ব্যবস্থা কর। তারপরে তুমি হাসো। তুমি হাসতে চাও, গোস্ত খেতে চাও; তবে তোমার গোস্তের একটা অংশ দিবে গরিবদের। তাদের মুখে হাসি ফোঁটাবে। তারপরে তুমি হাসবে।
তিনি বলেন, প্রতিবছর থার্টি ফার্স্ট নাইটে ফানুসের আগুনে বিভিন্ন জায়গায় আগুনের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সারাবছরের মধ্যে এদিনে সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত সময় পার করে। প্রতিবছর থার্টি ফার্স্ট আসার আগে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় যেন ফানুস উড়ানো না হয়। তারপরও সে নির্দেশনা উপেক্ষা করে এগুলো করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে ধর্মের নামে, রাজনীতির নামে, বিনোদনের নামে যে পরিমাণ শব্দ সন্ত্রাস হয়; পৃথিবীর কোনো সভ্য সমাজে এমন হয় না। আপনি অবাক হবেন, যেসব যুবকরা নিজেদের বিজ্ঞানমনস্ক মনে করে, সেই সমস্ত যুবকরা যখন এসব কাজে লিপ্ত হয়; তখন আমার কাছে অবাক লাগে এসব শিক্ষা যাচ্ছে কোথায়?
ডিবিসি/ এইচএপি