ময়মনসিংহের ভালুকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দিপু চন্দ্র দাস নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার পর গাছে ঝুলিয়ে মরদেহ পুড়িয়ে দিয়েছে উচ্ছৃঙ্খল জনতা। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী র্যাব জানিয়েছে, ধর্ম অবমাননার কোনো প্রমাণ তারা এখনো পায়নি। এই নৃশংস ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত ১৮শে ডিসেম্বর রাতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জামিরদিয়া এলাকায় এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড ঘটে। দিপু চন্দ্র দাস ভালুকার পাইওনিয়ার পোশাক কারখানায় ফ্লোর সুপারভাইজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
র্যাব-১৪ এর অধিনায়ক নয়মুল হাসান জানান, ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে দিপুকে প্রথমে চাকরি থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হয়। এরপর ফ্যাক্টরির ফ্লোর ম্যানেজার বা ইনচার্জ তাকে উত্তেজিত জনতার হাতে তুলে দেন। ফ্যাক্টরির ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, দিপু সুস্থ অবস্থায় ছিলেন এবং লোকজন তাকে ঘিরে রেখেছিল।
পরিবারের অভিযোগ, কারখানার দায়িত্বরতরা দিপুকে বাইরের উত্তেজিত জনতার কাছে তুলে দেওয়ার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। দিপুর গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলায়। পরিবারে তার বাবা-মা ছাড়াও স্ত্রী ও এক সন্তান রয়েছে।
একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তানকে হারিয়ে দিপুর মা এখন পাগলপ্রায়, আর স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। ঘটনার পর ডিবিসি নিউজ সরেজমিনে ভালুকার পাইওনিয়ার পোশাক কারখানায় গেলে সেখানকার কেউ কথা বলতে রাজি হননি এবং স্থানীয়রাও ভয়ে মুখ খুলছেন না।
ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, এ ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। নিহতের পরিবার এই নৃশংস হত্যার সঠিক তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছে।
ডিবিসি/আরএসএল