দুই বারের সংসদ সদস্যেরর ঠাঁই হয়েছে ভূমিহীনদের জন্য বরাদ্ধ সরকারের আশ্রয়ন প্রকল্পে। এমনি ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে। মুজিব বর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিহীনদের জন্য উপহার জমি ও ঘরের দলিল ও চাবি পেয়েছেন দুইবারের সাংসদ এনামুল হক জজ মিয়া।
শনিবার (২৩ জানুয়ারী) গফরগাঁও উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে দুইবারের সাংসদ এনামুল হক জজ মিয়াকে জমির দলিলসহ গৃহ হস্তান্তর করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গফরগাঁও উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন বাদল। তিনি জানান, দুইবারের সংসদ সদস্য হয়েও জীবনের শেষ বেলায় এসে একেবারেই নিঃস্ব এই মানুষটি। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছেন। ঘর পাওয়ার পর তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরে শুয়ে এবার শান্তিতে মরতে পারব।’
এনামুল হক জজ মিয়া জাতীয় পার্টির সাবেক চেয়ারম্যান হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের পালিত মেয়ে নাজুকে ১৯৭২ সালে বিয়ে করেন। পরে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে ময়মনসিংহ-১০ গফরগাঁও আসন থেকে জাতীয় পার্টির হয়ে দু’বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
এক সময় তার গফরগাঁও পৌর শহর ও ঢাকায় বিলাসবহুল বাড়ি ছিল। বর্তমানে প্রথম স্ত্রী এরশাদের পালিত মেয়ে নাজু এক মেয়েকে নিয়ে আমেরিকায় থাকেন।
দ্বিতীয় স্ত্রী নাছিমা হক ঢাকার পুরানা পল্টন ও মিরপুর কাজী পাড়ায় দুই সন্তান নিয়ে দুটি বাড়িতে থাকেন। সহায় সম্পদ যা ছিল সবই এই দুই স্ত্রী ও সন্তানদের নামে লিখে দিয়েছিলেন এনামুল হক।
কিন্তু সর্বশেষ সম্বল বলতে পৌর শহরে ১২ শতাংশ জমি ছিল। তাও কয়েক বছর আগে একটি মসজিদের নামে লিখে দিয়েছেন।
বর্তমানে তিনি তৃতীয় স্ত্রী রুমার সঙ্গে পৌর শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডে ভাড়া বাসায় ৮ বছরের সন্তান নুরে এলাহীকে নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছিলেন। ঘুমানোর জন্য খাট কেনার সামর্থ্য না থাকায় মেঝেতেই ঘুমাতেন তিনি। পরে পৌর মেয়র ইকবাল হোসেন সুমনের সহায়তায় খাট পায় সাবেক এই এমপি।
ঘরের দলিল ও চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানের সময় এক প্রতিক্রিয়ায় জজ মিয়া বলেন, ঘর পেয়ে আমি অনেক খুশি। খুব আনন্দ লাগছে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করি। আল্লাহপাক যেন তাকে (প্রধানমন্ত্রী) ভালো রাখেন এবং ভালো কাজ করার তৌফিক দান করেন।
জেলা প্রশাসক সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ময়মনসিংহে ৪ হাজার ৭০৮ জন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের তালিকা করা হয়। এর মধ্যে ২০২০-২১ অর্থ বছরে মুজিব শতবর্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণের জন্য প্রথম পর্যায়ে জেলার ১৩টি উপজেলায় ১৪৪ টি স্পটে ১ হাজার ৩০৫টি গৃহের অনুমোদন দেয়া হয়।
এরমধ্যে সদর উপজেলায় ২৫০টি, গফরগাঁওয়ে ২০০টি, ভালুকায় ১৯৯টি, গৌরীপুরে ১০২টি, হালুয়াঘাটে ১০০টি, ফুলপুরে ৯৭টি, নান্দাইলে ৬২টি, ঈশ্বরগঞ্জ, মুক্তাগাছা, ত্রিশাল, ফুলবাড়িয়া, তারাকান্দায় ৫০টি করে এবং ধোবাউড়ায় ৪৫টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। তালিকায় থাকা বাকিদেরও পর্যায়ক্রমে প্রকল্পের আওতায় আনা হবে।