ইলিশসহ অন্যান্য মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস অভয়াশ্রমে সকল প্রকার মাছ ধরা বন্ধ থাকার পর আজ থেকে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ ধরা শুরু হয়েছে। র্দীঘ প্রতিক্ষার পর ঈদের আগ মুহুর্তে নদীতে মাছ ধরতে পারায় তাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
এতদিন যেসব আড়তে ছিল সুনশান নিরবতা সেইসব আড়ত জেলে, মৎস্যজীবী ও আড়তদারদের হাঁকডাকে মুখরিত হয়ে উঠবে। মাছ ধরে বিগত দিনের ধার-দেনা শোধ করে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন বলে আশাবাদী জেলেরা।
সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন মাছঘাট ঘুরে জানা গেছে, গত দুই মাস ভোলাসহ দেশের ছয়টি অভয়াশ্রমে সকল প্রকার মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মৎস্য বিভাগ। এতে করে ভোলার মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকার অভায়শ্রমে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ থাকায় জেলার দেড় লক্ষাধিক জেলে বেকার হয়ে পড়ে। ওই সময় জেলেরা নৌকা তৈরি, মেরামত ও জাল বোনাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত ছিল। নিষেধাজ্ঞা শেষে ১ মে থেকে জেলার সংকট কাটিয়ে নতুন উদ্দ্যোমে নদীতে মাছ শিকারে নেমেছে।
সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের ভোলার খাল মাছঘাট এলাকার জেলে ইউসুফ মাঝি জানান, নদীতে কাঙ্খিত মাছ পেলে পেছনের ধার ধেনা পরিশোধ করে স্বচ্ছলতা ফিরে আসবে। পাশাপাশি পরিবার পরিজন নিয়ে ভালো ভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারবেন বলে জানান তিনি।
আড়তদার ফারুক হাওলাদার জানান, তারা দীর্ঘদিন আড়তে মাছ বেচাকেনা বন্ধ রেখেছেন। আজ থেকে জেলেরা মাছ ধরতে যাওয়ায় তারাও আড়ৎ খুলে বসেছে। জেলেদের জালে মাছ উঠলে একদিকে যেমন জেলেরা লাভবান হবে অন্যদিকে তাদেরও আয় বাণিজ্য ভালো হবেন বলে জানান আড়তদাররা।
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আজহারুল ইসলাম বলেন, দুই মাস মাছ শিকার বন্ধ থাকায় তাদের অভিযান সফল হয়েছে। এতে করে আগামীতে ইলিশসহ অন্যন্য মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে আলা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, নিষেধাজ্ঞার দুই মাসে ৪০০ অভিযানে ৮৯৭ জনকে আটক করেছে প্রশাসন। এর মধ্যে ১১২ জনকে কারাদন্ড ও বাকিদের কাছ থেকে প্রায় ২৪ লাখ টাকা আদায় করা হয়।
উল্লেখ্য, ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ ধরার বন্ধ ছিল। এ সময় ৯৩ হাজার নিবন্ধিত জেলেকে পুনর্বাসনের চাল দেওয়া হয়।