সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অনলাইনে প্রতারণার শিকার হয়ে বিপুল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন এক ভারতীয় ব্যাংক কনসালট্যান্ট। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ভারতীয় এ বিষয়ে দুবাই পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হোয়াটসঅ্যাপ-ভিত্তিক অনলাইন গ্রুপে প্রতারণার শিকার হয়ে ১ লাখ দিরহাম হারিয়েছেন ওই ভারতীয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৩৩ লাখ টাকার বেশি।
এই বিপুল পরিমাণ অর্থ তিনি ঋণ করে জোগাড় করেছিলেন। এখন তাকে ৮ হাজার দিরহাম করে ঋণের কিস্তি শোধ করতে হচ্ছে। যা তার মাসিক বেতনের অর্ধেকের চেয়েও বেশি। খালিজ টাইমস বলছে, প্রতারণার পুরো বিষয়টি ঘটেছিল হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের মাধ্যমে। ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে 'Stock Market Strategy C4'নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ-ভিত্তিক অনলাইন গ্রুপে যুক্ত করা হয়েছিল। প্রতারকদের সঙ্গে কখনো তার কথা কিংবা দেখা হয়নি।
তিনি জানিয়েছেন, প্রতারক চক্রের সদস্যরা নিজেরাই নকল গ্রাহক সেজে গ্রুপে পোস্ট করত এবং অ্যাডমিনদের ধন্যবাদ জানিয়ে বার্তা দিত। তাদের উদ্দেশ্য ছিল একটি বিশ্বাসযোগ্য পরিবেশ তৈরি করা। ভুক্তভোগীর কথায়, "আমার মনে হচ্ছিল যে আমি হয়তো বড় একটি সুযোগ হাতছাড়া করে ফেলছি।"
কিছুদিন পরই গ্রুপের একজন অ্যাডমিন তাকে ব্যক্তিগতভাবে মেসেজ করে এবং তাকে ট্রেডিংয়ে সাহায্য করার প্রস্তাব দেয়। সেই অ্যাডমিনের নির্দেশনায় তিনি একটি ভুয়া ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মে অ্যাকাউন্ট খোলেন। এরপর প্রতারকদের দেওয়া আমিরাতের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তিনি দুই কিস্তিতে ৬৫ হাজার দিরহাম জমা দেন। এছাড়াও, তার ভারতীয় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৮ লক্ষ রুপি প্রতারকদের দেওয়া অন্য একটি অ্যাকাউন্টে পাঠান।
ওই ভারতীয় বলেন, ‘প্রতারণার বিষয়টি মনে হলে বিশ্বাস করতে পারি না যে, আমি এর মধ্য দিয়ে গিয়েছি। অনলাইন গ্রুপে আমি এমন লোকদের বিশ্বাস করেছিলাম, যাদের সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। এমনকি তাদের গলার আওয়াজও ছিল আমার অজানা। তারা আমাকে শেষ করে দিল।’
ভুক্তভোগী ভারতীয় ব্যক্তি অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা। গত এপ্রিল মাসে এই ঘটনার শুরু। তাকে যে গ্রুপে যুক্ত করা হয় সেটিতে ১৩৭ জন সদস্য ছিল এবং ভারতীয় মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে অ্যাডমিনরা এটি পরিচালনা করতেন।
ডিবিসি/এমএআর