দেশের এক-তৃতীয়াংশ ইলিশের উৎপাদনকারী জেলা ভোলা আজ থেকে ইলিশের বাড়ি বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, এখানে সত্যিকারের জেলেরা প্রচুর পরিশ্রম করেন তারা আইন ভঙ্গ করেন না। কিন্তু কিছু মুনাফা লোভী ব্যবসায়ীরা নিষেধাজ্ঞা কালীন ইলিশ শিকারের সাথে জড়ি থাকে। তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর বাহিনীর মাধ্যমে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে ভোলার মেঘনা নদীর তীরবর্তী শিবপুর ভোলার খাল সংলগ্ন মাঠে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে বিভিন্ন পর্যায়ের স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে সচেতনতা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, জেলেদের দাদন ব্যবস্থা বন্ধ করতেই হবে। দাদনের কারণে জেলেরা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছেন না। এ দাদনের বিরুদ্ধে আমাদেরকে রুখে দাঁড়াতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে জেলেদের দাবির প্রেক্ষিতে সরকারকে এ বিষয়গুলো বলা শুরু করেছি। জেলেদেরকে যদি একেবারে সুদমুক্ত ঋণ দিতে যদি নাও পারি, স্বল্প সুদে যাতে ঋণ দেওয়া হয় সে ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির প্রয়োজনে বছরে তিন বার জেলেদের মাছ ধরা থেকে বিরত থাকতে হয়। এ নিষেধাজ্ঞাকালিন সময়ে জেলেদের জন্য অন্য কিছু করা যায় কি না বা সুযোগ সুবিদা বাড়ানো যায় কিনা সে পরিকল্পনাও রয়েছে। তবে এ কাজগুলো করতে আমাদের একটু সময় দিতে হবে।
ভারত ও মায়ানমারের জেলেরা বাংলাদেশের সীমানায় এসে মাছ শিকারের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ভারত ও মায়ানমারের জেলেদের বাংলাদেশের জলসিমায় মাছ ধরার কোনো অধিকার নাই। তারা এটা করতে পারে না। তাই কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীকে ওই সকল জেলেদেরও ধরে এখান থেকে বিতারিত করতে হবে।
ফরিদা আখতার বলেন, ইলিশ একটি মূল্যবান সম্পদ। শুধু ইলিশ রক্ষা করা না, ইলিশের সাথে জড়িত যারা আছেন বিশেষ করে জেলেদের রক্ষা করাও আমাদের কাজ। তাদের রক্ষা করা না গেলে আমাদের ইলিশ অন্য কেউ ধরে নিয়ে যাবে। তাই জেলেদেরকে রক্ষা করতে তাদের বরাদ্দকৃত চালের পাশাপাশি টাকা দেওয়াসহ যে সকল দাবি আছে সেগুলো পুরণ করা হবে। তবে এ মুহুর্তে বলতে পারছি না যে এতা দিয়ে দিবো। তবে এটুকু বলতে পারি ঢাকায় ফিরে গিয়ে তাদের দাবিরগুলো গুরুত্বের সাথে আলোচনা করবো।
তিনি বলেন, কিছু অসাধু লোক যারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ নিধন করছে এং অবৈধ জাল দিয়ে যারা মাছ শিকার করছে তারা জেলে নয়, তারা খুনি। তারা মাছগুলোকে হত্যা করছে। তাদেরকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলবো তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
সভায় জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. জিল্লুর রহমান, ভোলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফুল হক, কোস্ট গার্ড দক্ষিণ জোনের জোনাল কমান্ডার ক্যাপটেন মোহাম্মদ শাহীন মজিদ।
ডিবিসি/কেএলডি