বিশ্বের মানচিত্রে ক্ষুদ্র বাংলাদেশকে আলাদা পরিচিতি এনে দিয়েছে জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেট। বিগত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে এ খেলা।
বিশ্বের মানচিত্রে ক্ষুদ্র বাংলাদেশকে আলাদা পরিচিতি এনে দিয়েছে জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেট। বিগত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে এ খেলা। বাংলাদেশের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান, মাশরাফি বিন মর্তুজা, মোস্তাফিজুর রহমানসহ আরও অনেক খেলোয়াড়ের নাম বিশ্ব ক্রিকেটে ব্যাপক পরিচিত।
আর ক্রিকেট ব্যাট তৈরি করে দেশব্যাপী ক্রিকেটকে ছড়িয়ে দিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন পিরোজপুরের নেছারবাদের প্রত্যন্ত অঞ্চলের একদল কারিগর।
উপজেলার উড়িবুনিয়া গ্রামের আব্দুল লতিফ বেপারী নামের এক কাঠমিস্ত্রির নেতৃত্বে ঢাকার খেলাঘর নামের খেলাধূলা সামগ্রীর
একটি দোকানে পাকিস্তান থেকে আমদানি করা ক্রিকেট ব্যাটের নকশা দেখে প্রথমবারের মত তারা দেশেই ক্রিকেট ব্যাট তৈরি করেন।
ক্রিকেট ব্যাট তৈরির প্রধান কারিগর আব্দুল লতিফ ২০১২ সালে মারা গেলেও, এখনও স্বল্প পরিসরে ক্রিকেট ব্যাট তৈরি করেন তারই সহকর্মীরা। ১৯৯২ সালের দিকে গ্রামের বাড়িতে ফিরে বাণিজ্যিকভাবে ক্রিকেট ব্যাট তৈরি শুরু করেন আব্দুল লতিফ এবং তার সহযোগীরা।
এরপর ১৯৯৭ সালে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি ক্রিকেট দল আইসিসি ট্রফি জেতার পর বাড়তে থাকে ক্রিকেট ব্যাটের চাহিদা। আর তার সাথে তাল মিলিয়ে নেছারাবাদের বলদিয়া ইউনিয়নের উড়িবুনিয়া, জিলবাড়ী, বিন্না, খেজুরবাড়ি এবং কাঠাখালি গ্রামে বাড়তে থাকে ক্রিকেট ব্যাট তৈরির কারখানা।
বর্তমানে বলদিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে দুই শতাধিক ক্রিকেট ব্যাট তৈরির কারখানা রয়েছে যেখানে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে দুই সহস্রাধিক নারী ও পুরুষের।
প্রতিবছর বাংলা অগ্রহায়ন থেকে বৈশাখ মাস পর্যন্ত বিভিন্ন বয়সের শিশু ও যুবকদের জন্য ৯ টি সাইজের ক্রিকেট ব্যাট তৈরি করেন নেছারাবাদের কারিগরেরা।
এরপর সেই ব্যাটগুলোই ছড়িয়ে পড়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এ ব্যবসা থেকে বছরে প্রায় ১৫ কোটি টাকা উপার্জন হয়।
মূলত স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা কদম এবং আমড়া গাছের কাঠ থেকেই ক্রিকেট ব্যাট তৈরি করা হয়। মানসম্মত ক্রিকেট ব্যাট তৈরির সকল যোগ্যতা থাকলেও, ভালো মানের কাঠের অভাবে ভালো মানের ব্যাট তৈরি করতে পারছেন না এসব দক্ষ কারিগরেরা। তাই সরকারের কাছে তাদের দাবি যাতে তাদের জন্য মানসম্মত কাঠের ব্যবস্থা করা হয়।