বিবিধ, লাইফস্টাইল

ধনী হওয়ার সহজ উপায়

Faruque

ডিবিসি নিউজ

বৃহঃস্পতিবার ৯ই ডিসেম্বর ২০২১ ০৮:৪৫:১৮ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

আপনি যে অবস্থান থেকেই উঠে আসেন না কেন, সেটি বিষয় নয়। আপনি কোথায় পৌঁছাতে পেরেছেন, আপনার অর্জন কতটুকু, দিনশেষে সেটিই হলো হিসাবের বিষয়। পরিশ্রম কিংবা প্রচেষ্টার পাশাপাশি ধনী হওয়ার জন্য আপনাকে কিছু বুদ্ধি খাটিয়েও চলতে হবে।

ধনী হতে কে না চায়। চাকরি বা ব্যবসা যে পেশায়ই মানুষ থাকুক না কেন ধনী হওয়ার বাসনা সবারই। কিন্তু সবার পক্ষে ধনী হওয়া সম্ভব নয়। ধনী হওয়ার আশা আমরা যদি নাও করি তবুও তুলনামূলক বেশি সম্পদের মালিক হতে চাই। তবে সম্পদের মালিক হতে গেলে জীবনের অনেক অভ্যাস বদলে ফেলতে হবে।

আসুন জেনে নেই যেসব কাজ ঠিকঠাক করতে পারলে বা অনুসরণ করলে বুঝতে হবে সম্পদ ধরা দেবে :

১. স্বপ্নকে অনুসরণ: যারা ভালো কিছু করার চেষ্টা করেন তার জীবনের স্বপ্ন পূরণের জন্য কাজ করেন। তারা স্বপ্নকে অনুসরণ করে জীবন পরিচালিত করেন। ফলে স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন।

২. প্রতিদিন শেখা: সফল মানুষরা প্রতিদিনই নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করেন। ৮৮ ভাগ ধনী লোক প্রতিদিন ৩০ মিনিট বা তারও বেশি সময় কঠোরভাবে জানতে এবং নিজেকে শিক্ষিত করতে ব্যয় করেন।

৩. চিন্তা নিয়ন্ত্রণ: আপনি বড় চিন্তা করতে পারেন। আপনার একটি বড় কল্পনা শক্তি আছে। আপনি যা কিছু করছেন তার মালিক আপনিই। ৯১ ভাগ ধনী ব্যক্তি নিজেই সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী।

৪. দায়িত্বশীলতা: দায়িত্বজ্ঞান থেকে আপনি লজ্জা পান না। বস্তুত আপনি সুযোগ খোঁজেন, যা আপনাকে আরো দায়িত্ববান করে।

৫. ঝুঁকি গ্রহণ: আপনি সতর্ক এবং ঝুঁকি নিতে বেপরোয়া নন। সতর্ক ঝুঁকি গ্রহণকারী তাদের বাড়ির কাজ করেন, নতুন ধারণা এবং উদ্যোগ তাদের একটি ব্যবসার মধ্যে চালু করার আগে ঝুঁকি নিতে তারা দক্ষতা এবং জ্ঞানকে কাজে লাগান।

৬. পদক্ষেপ নেন: আপনি কোনো পদক্ষেপ নিতে ভীত নন। সফলতার জন্য আপনাকে পদক্ষেপ নিতে হবে। বসে থাকলে বা শুধু চিন্তা করলে কখনোই সফল হওয়া যাবে না।

৭. ব্যর্থতা জয় করা: একবার ব্যর্থ হলে থেমে যাওয়ার উপায় নেই। ব্যর্থতাকে আপনি অভিজ্ঞতা অর্জন ছাড়া অন্য কিছু হিসেবেই দেখছেন না। তাহলে বুঝবেন ধনী হওয়া যাবে।

৮. আউটওয়ার্ক করা: ধনী ব্যক্তিরা দিন, সপ্তাহ, মাস এবং বছরব্যাপী কাজ করতে ভীত নন। ধনী ব্যক্তিরা সপ্তাহে গড়ে ১১ ঘণ্টা বেশি কাজ করেন।

৯. দৃঢ়সংকল্প: লক্ষ্য পূরণের জন্য ক্রমাগত দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হতে হবে এবং লক্ষ্যের পেছনে ছুটেন জীবনে নিজেকে সামনে এগিয়ে নিতে। ধনীদের ৮০ ভাগই লক্ষ্য কেন্দ্রীক। তারা লক্ষ্য অর্জনে অভ্যস্ত হতে অভ্যাস গড়ে তোলেন।

১০. প্রত্যাশাকে অতিক্রম: প্রত্যাশাকে অতিক্রম করা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি অন্যদের প্রত্যশাকে অতিক্রম করার চেষ্টা করেন। তাহলে ধনী হওয়া যাবে।

১১. সামাজিক সম্পর্ক: আপনি যদি অন্যের জন্মদিনে ফোন করে বা এমনিতে ফোন করে অন্যের খোঁজ খবর নেন তাহলে আপনার যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে। আপনার মূল্যবান সম্পর্ক আপনার জন্য নানা দ্বার খুলে দেবে। সম্পর্ক আপনার কাছে অর্থের মতোই দামি।

১২. অন্যকে প্রাধান্য: লোকজন আপনাকে পছন্দ করে। তারা আপনার সঙ্গে কাজ করতে এবং ব্যবসা করতে পছন্দ করে। আপনি লোকদের প্রফুল্ল হতে, সুখী, উৎসাহী এবং আশাবাদী করে তোলেন।

১৩. মিতব্যয়ী: মিতব্যয়ী হওয়াটা ধনী হওয়ার অন্যতম উপায়। বিশ্বখ্যাত বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেট বিলিয়ন ডলারের মালিক। তিনি নিজেকে অত্যন্ত মিতব্যয়ী বলে দাবি করেন। ১৯৫৮ সালে অল্প দামে যে বাড়িটি তিনি কিনেছিলেন এখনো সে বাড়িতেই বাস করছেন। এ ছাড়া জীবন যাপনের জন্য সর্বদা সাধারণ উপকরণ ব্যবহার করতেই তিনি পছন্দ করেন। একইভাবে টাকা হলেই নানা বিলাসপণ্য ব্যবহার করে তা শেষ করতে হবে কিংবা ঘন ঘন গাড়ি-বাড়ি বদল করতে হবে এমন ধারণাকে তিনি অপছন্দ করেন।

১৪. ভুল থেকে শিক্ষা: দু-একবার ভুল করা মানেই সব কিছু শেষ হয়ে যাওয়া নয়। সবারই ভুল হয়। ফেসবুকের সিইও মার্ক জাকারবার্গ শুরুতে একটি বড় ভুল করেছিলেন। তবে এ ভুলের কারণে তিনি যে হতাশ হয়ে গিয়েছিলেন তা নয়। এ ভুলটি তিনি পরবর্তী সময়ে দ্রুত সংশোধন করে নেন। তিনি জানান, এ ভুলের কারণে হয়তো তাঁর কয়েক বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের কোনো ভুল যেন আর না হয় সে জন্য তিনি সতর্ক হয়ে গেছেন।

১৫. আত্মবিশ্বাস: যে বিষয়টি আপনার বিশ্বাস, সে বিষয়েই বিনিয়োগ করতে হবে। অন্যথায় বিনিয়োগ থেকে সঠিক ফলাফল পাওয়া যাবে না। অ্যামাজনডটকমের সিইও জেফ বিজোস ২০১৩ সালে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা কিনে নেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, এতে তিনি ভালো করতে পারবেন। তাঁর সে বিশ্বাসকে তিনি বাস্তবে প্রমাণ করেন। তাঁর মালিকানায় ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা বর্তমানে ভালোভাবে চলছে।

১৬. সঠিকভাবে অর্থের জোগান: নগদ অর্থের প্রবাহ ছাড়া ব্যবসা চালু রাখা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াতে পারে। হংকংয়ের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি লি কা-শিং। অল্প বয়সেই তাঁকে পরিবারের সহায়তার জন্য পড়াশোনা ছাড়তে হয়। তবে ২২ বছর বয়সেই তিনি সফলভাবে প্রথম ফ্যাক্টরি চালু করতে সক্ষম হন। এরপর নানা ধরনের ব্যবসা সফলভাবে করেছেন তিনি। ব্লুমবার্গ ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তিনি সর্বদা নিজের আর্থিক প্রবাহ ঠিক রেখেছেন।

১৭. কর বিষয়ে জ্ঞান: অধিকাংশ ব্যবসাতেই একটি বড় বিষয় হলো কর। আর এ বিষয়টিতে অন্যের ওপর নির্ভর করে সফল হওয়া যায় না। এ জন্য উদ্যোক্তাদের উচিত কর বিষয়ে যাবতীয় আইনকানুন জেনে নেওয়া। ধনী ব্যক্তিরা সর্বদা এসব বিষয় নিজেই বুঝে নিয়ে তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন। এ বিষয়ে ওয়ারেন বাফেট বলেন, বিনিয়োগ নির্ভর করে তা থেকে কতখানি লাভ পাওয়া যাবে তার ওপর। কোনো ক্ষেত্রে কর যদি বেশি হয় তাহলে সেখানে বিনিয়োগ না করাই ভালো।

আরও পড়ুন