পূর্ববঙ্গবাসীর স্বার্থ আদায়ে বিশ শতকের গোড়ার দিকে যিনি নেতৃত্বের হাল ধরেন, তিনি হলেন নওয়াব স্যার খাজা সলিমুল্লাহ। জন্ম ৭ জুন ১৮৭১। তার বাবা ছিলেন নওয়াব স্যার আহসানুল্লাহ (১৮৪৬-১৯০১) এবং দাদা ছিলেন নওয়াব স্যার আবদুল গণি (১৮১৩-১৮৯৬)।
স্যার খাজা সলিমুল্লাহ ছিলেন নিখিল ভারত মুসলিম লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। বাংলার মুসলিমদের শিক্ষার পেছনে সলিমুল্লাহ বিশেষ অবদান রেখেছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায়ও বিশেষ ভূমিকা রাখেন। এ জন্য তিনি রমনা এলাকায় কিছু জমিও দান করেন। এ ছাড়া আহসানউল্লাহ স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং (বর্তমানে বুয়েট) প্রতিষ্ঠার পেছনেও তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
খাজা সলিমুল্লাহ বঙ্গভঙ্গের একজন একনিষ্ঠ সমর্থক ছিলেন এবং ১৯০৭ সালে তিনি মুসলিম লীগের সভাপতির দায়িত্ব নেন। ১৯০১ সালে তার বাবার মৃত্যু হলে তিনি ঢাকার নবাব পদে অধিষ্ঠিত হন। এর আগে তিনি ময়মনসিংহে ব্যবসা করতেন। ১৯০৩ সালে লর্ড কার্জন এক সফরে ঢাকা আসেন। এ সফরে স্যার সলিমুল্লাহ লর্ড কার্জনকে পূর্ব বাংলার সমস্যাগুলো সম্পর্কে অবহিত করেন। এদিকে আসামের উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য রপ্তানির জন্য চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের কথা ভাবছিল ব্রিটিশরা। ফলে নবাবের আবেদন ও ব্রিটিশদের বাণিজ্যিক স্বার্থে খুব অল্প সময়েই বঙ্গভঙ্গের ঘোষণা আসে। এর ফলে বাঙালি হিন্দুদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
খাজা সলিমুল্লাহর বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ঢাকার নবাব পরিবারকে ভারতীয় উপমহাদেশে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যায়। ঢাকার এই নবাবের নামে বাংলাদেশের বেশ কিছু স্থানের নামকরণ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ, ঢাকা; নবাব সলিমুল্লাহ রোড, নারায়ণগঞ্জ।
মাত্র ৪৩ বছর বয়সে ১৯১৫ সালের ১৬ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন ঢাকার চতুর্থ নবাব খাজা সলিমুল্লাহ।
ডিবিসি/এএনটি