রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে অনুভূত হওয়া ৫ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নরসিংদী জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার (২১শে নভেম্বর) আকস্মিক এই ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে এবং ভবন ধসে জেলার বিভিন্ন স্থানে মর্মান্তিকভাবে ৪ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও শতাধিক মানুষ।
নরসিংদীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন শুক্রবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ভূমিকম্পের তীব্রতায় জেলায় জানমালের বেশ ক্ষতি হয়েছে। নিহতরা হলেন কাজম আলী ভূঁইয়া (৭০), নাসির উদ্দিন (৫০), দেলোয়ার হোসেন (৩৭) এবং দেলোয়ারের শিশু সন্তান ওমর ফারুক (৮)।
স্থানীয় ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, নিহতদের মধ্যে বৃদ্ধ কাজম আলী ভূঁইয়া মাটির ঘর ধসে এবং দেলোয়ার হোসেন ও তার ছেলে ওমর ফারুক ঘরের দেয়াল চাপায় প্রাণ হারান। এছাড়া ভূমিকম্পের সময় প্রচণ্ড আতঙ্কে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নাসির উদ্দিন।
ভূমিকম্পের প্রভাবে জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতেও বড় ধরনের বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাবস্টেশনে ভূ-কম্পনের ফলে বিপুল পরিমাণ পিটি (প্রডাকশন ট্রান্সফরমার) ভেঙে পড়ে এবং অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং সাবস্টেশনটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, ঘোড়াশাল পলাশ ফার্টিলাইজার কারখানার ইউরিয়া প্রডাকশনও সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। কম্পনের সময় ইঞ্জিন মেশিনারিজগুলোতে তীব্র ভাইব্রেশন হওয়ায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে বা নিরাপত্তার স্বার্থে সেগুলো বন্ধ হয়ে যায়, যা বর্তমানে চেকিং অপারেশনের আওতায় রয়েছে।
ক্ষয়ক্ষতির তালিকায় যুক্ত হয়েছে জেলার প্রশাসনিক ভবনগুলোও। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও সার্কিট হাউসহ জেলার শতাধিক ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে প্রশাসন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসন থেকে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সেখান থেকে ভূমিকম্পে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি ও দুর্যোগ মোকাবিলার সার্বিক পরিস্থিতির ওপর নজরদারি এবং খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।
ডিবিসি/এএমটি