'কিংস পার্টি' বলে পরিচিত রাজনৈতিক দল গঠনের হিড়িক পড়েছে। বিগত কয়েক দশক ধরে প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের আগেই নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের দৌড় শুরু হয়। ছোট্ট একটি দেশে অনেক রাজনৈতিক দল থাকার পরও এত এত নতুন দলের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্নে উঠছে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪ সালের ৫ই আগস্টের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে গড়ে প্রতিমাসে ৩টিরও অধিক দলের জন্ম হয়েছে। নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ইসিকে সতর্ক হবার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
২০২৪ সালের গত ৫ই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে অন্তত ২০টি দলের জন্ম হয়েছে। নতুন দলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে প্রথম সারিতে থাকা শিক্ষার্থীদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি। সবচেয়ে বেশি আলোচনা থাকলেও নানামুখি সমালোচনায় আঁতুড়ঘর নিজেদের পথচলাকে কিছুটা প্রশ্নবিদ্ধ করছে দলটিকে। অবশ্য দলীয় ফাণ্ড নিয়ে সমালোচনামুখে 'ক্রাউন্ড ফান্ডিং'-এর মাধ্যমে দল পরিচালনার অর্থ সংগ্রহের ঘোষণা দিয়েছে এনসিপি।
এছাড়াও যেসব দল আত্মপ্রকাশ করেছে, তাদের মধ্যে আছে সমতা পার্টি, নিউক্লিয়াস পার্টি অব বাংলাদেশ (এনপিবি), জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টি, বাংলাদেশ জনপ্রিয় পার্টি (বিপিপি), বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি), বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), দেশ জনতা পার্টি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক শক্তি, জনতার পার্টি, বাংলাদেশ আ-আম জনতার পার্টি।
রাজনীতির মাঠে একের পর এক নতুন দলের আগমনকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চা বলে মত দেন সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী আহসানুল করিম। তবে সুস্থ রাজনীতির স্বার্থে নতুন দলের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ইসিকে সতর্ক হবার পরামর্শ দেন তিনি।
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর নিবন্ধন চেয়ে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছিল ১৩টি রাজনৈতিক দল। এগুলো হচ্ছে: ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ বাংলাদেশ), বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি), সমতা পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় ভূমিহীন আন্দোলন, বাংলাদেশ বৈষম্যবিরোধী গণতান্ত্রিক দল, ন্যাশনাল কংগ্রেস বাংলাদেশ (এনসিবি), বাংলাদেশ মুসলিম পার্টি-জাতীয় পার্টি, তৃণমূল জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি, সর্বজন বিপ্লবী দল ও মৌলিক বাংলা।
২০ এপ্রিল নিবন্ধনের পূর্ব ঘোষিত শেষ দিন। যদিও নিবন্ধনের সময় আরো ৩ মাস বাড়াতে আবেদন করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি।
দেশে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫১। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে ৭৬টি দল নিবন্ধনের জন আবেদন করে। আর পরের নির্বাচনে সে আবেদনের সংখ্যা দাড়ায় ৯৩টিতে।
ডিবিসি/এএনটি