নিহত ফখরুল ইসলাম উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের খালাসী বাড়ির বদিউজ্জামানের ছেলে। পরিবার এই ঘটনাকে কিশোর গ্যাংয়ের পরিকল্পিত হামলা দাবি করলেও পুলিশ ও স্থানীয় একটি পক্ষ একে গণপিটুনি বলে অভিহিত করেছে।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার ভোর ৬টার দিকে ফখরুল তার বড় বোন শাহনাজ আক্তার টুম্পার অসুস্থ মেয়েকে দেখতে বোনের বাড়িতে যান। সেখান থেকে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নিজের বাড়িতে ফেরার পথে হাজীপুর ইউনিয়নের মান্দার বাড়ির দরজায় পৌঁছালে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা ১৫-২০ জন কিশোর গ্যাং সদস্য তার সিএনজি অটোরিকশার গতিরোধ করে। সন্ত্রাসীরা তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে এবং বেধড়ক পিটিয়ে হত্যা করে। পরিবারের দাবি, পূর্ব শত্রুতা ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।

অন্যদিকে ঘটনার ভিন্ন প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেছেন চৌমুহনী বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মোতালেব। তার দাবি, সোমবার সকালে তার ছেলে মিজানুর রহমান ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে চৌমুহনী বাজারের উদ্দেশ্যে বের হন। পথে উপজেলার মনতাজ স্যারের বাড়ির সামনে পৌঁছালে ফখরুল ও তার সহযোগীরা মিজানুরের অটোরিকশা আটকে মারধর করে টাকাগুলো ছিনিয়ে নেয়। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় উত্তেজিত জনতা ঘটনাস্থলে গিয়ে ফখরুলকে গণপিটুনি দেয়, এতে তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পরপরই বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সন্ত্রাসীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করে এবং নিহত ফখরুলের আড্ডাস্থলে হামলা চালায়।

এ বিষয়ে বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ বারী জানান, নিহত ফখরুল ইসলাম বলির বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে ৫-৭টি মামলা রয়েছে। এলাকায় তার বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে জনমনে দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ছিল, যার জেরে তাকে গণপিটুনি দেওয়া হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
 

ডিবিসি/এমএআর