আন্তর্জাতিক, ইউরোপ

ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার আশা ছাড়লেন জেলেনস্কি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ডিবিসি নিউজ

রবিবার ১৪ই ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:৪৬:৫১ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

রাশিয়ার সঙ্গে দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান ঘটাতে অবশেষে বড় ধরনের ছাড় দিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছেন যে, ন্যাটো সামরিক জোটে যোগ দেওয়ার দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা থেকে সরে এসেছে ইউক্রেন।

বার্লিনে মার্কিন ও ইউরোপীয় দূতদের সঙ্গে শান্তি আলোচনার ঠিক আগমুহূর্তে জেলেনস্কি এই নীতিগত পরিবর্তনের কথা জানালেন। একে তিনি যুদ্ধের সমাপ্তি টানতে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে একটি আবশ্যিক ‘সমঝোতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

 

ন্যাটোর সদস্যপদের পরিবর্তে জেলেনস্কি এখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় মিত্রদের কাছ থেকে শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা বা ‘সিকিউরিটি গ্যারান্টি’র দাবি জানিয়েছেন। হোয়াটসঅ্যাপে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি স্পষ্ট করেন যে, শুরু থেকেই ইউক্রেনের লক্ষ্য ছিল ন্যাটোতে যোগ দেওয়া, যা তাদের প্রকৃত সুরক্ষা দিতে পারত। 

 

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কিছু অংশীদার এই উদ্যোগে সমর্থন না দেওয়ায় এখন তারা বিকল্প পথের দিকে হাঁটছেন। জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, কানাডা ও জাপানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা চুক্তির ওপর জোর দিচ্ছেন, যা ন্যাটোর ‘আর্টিকেল ৫’-এর মতোই ইউক্রেনকে ভবিষ্যতে রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে রক্ষা করবে এবং তা আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক হতে হবে।

 

ইউক্রেনের এই সিদ্ধান্ত রাশিয়ার অন্যতম প্রধান যুদ্ধের লক্ষ্য পূরণ করল। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছিলেন যে, ইউক্রেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে ন্যাটোর উচ্চাকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করতে হবে এবং একটি নিরপেক্ষ দেশ হিসেবে অবস্থান করতে হবে। 

 

যদিও ইউক্রেন এখনো রাশিয়ার কাছে কোনো ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সম্মতি জানায়নি, তবে ন্যাটো থেকে সরে আসা কিয়েভের অবস্থানে একটি বড় পরিবর্তন।

 

শান্তি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে একটি ২০-দফা পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা চলছে। এর শেষ ধাপে বর্তমান যুদ্ধক্ষেত্র বা ফ্রন্ট লাইন বরাবর একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন জেলেনস্কি। 

 

এই আলোচনার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও জ্যারেড কুশনার বার্লিনে পৌঁছেছেন। জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জ আয়োজিত এই সম্মেলনে ইউরোপীয় নেতারাও যোগ দিচ্ছেন, যা ইউক্রেনের ভবিষ্যতের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

 

এদিকে শান্তি আলোচনার প্রস্তুতির মধ্যেই ইউক্রেনজুড়ে রুশ হামলা অব্যাহত রয়েছে। বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় ভয়াবহ হামলার কারণে দেশটির বিশাল একটি অংশ অন্ধকারে নিমজ্জিত। জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন যে, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করছে এবং সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়াচ্ছে। তবুও প্রায় চার বছর ধরে চলা এই সংঘাত নিরসনে ট্রাম্প প্রশাসনের চাপের মুখে ইউক্রেন এখন বাস্তবসম্মত সমাধানের পথ খুঁজছে।

 

সূত্র: রয়টার্স

 

ডিবিসি/এনএসএফ

আরও পড়ুন