নড়াইল সদর উপজেলায় নিখোঁজ হওয়ার তিন দিনের মাথায় কিশোর ইজিবাইক চালক আলিপ (১৫) হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। ইজিবাইকের ব্যাটারি ছিনিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে কোমল পানীয়র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে তাকে হত্যা করা হয়। এই নৃশংস ঘটনায় জড়িত দুই ঘাতককে গ্রেপ্তারের পর তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ই অক্টোবর) সন্ধ্যায় নড়াইল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম, পিপিএম (বার) এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
পুলিশ জানায়, সদর উপজেলার ছোট মিতনা গ্রামের আলিপ গত ৩রা অক্টোবর সকালে তার ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। এ ঘটনায় তার মা রোজিনা বেগম ৫ই অক্টোবর নড়াইল সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডির পর পুলিশ ঘটনাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে।
তদন্তের এক পর্যায়ে পুলিশ জানতে পারে, নিখোঁজ হওয়ার আগে আলিপকে স্থানীয় মিনারুল বিশ্বাস (২২) ও হৃদয় মোল্যার (২০) সঙ্গে শেষবার দেখা গিয়েছিল। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ প্রথমে মিনারুলকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে মিনারুল হত্যার কথা স্বীকার করে এবং এই ঘটনার বর্ণনা দেয়।
মিনারুল জানায়, সে ও তার সহযোগী হৃদয় মোল্যা পরিকল্পনা করে আলিপকে কোমল পানীয়র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাওয়ায়। আলিপ অচেতন হয়ে পড়লে তারা তাকে দেবভোগ বিল এলাকায় নিয়ে গলা টিপে হত্যা করে। এরপর লাশ পাশের একটি ডোবার কচুরিপানার নিচে লুকিয়ে রাখে। পরদিন তারা আলিপের ইজিবাইকের ব্যাটারি খুলে নড়াইল শহরের মুচিরপোল এলাকায় বিক্রি করে দেয়।
মিনারুলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ইজিবাইক, ব্যাটারি এবং ভিকটিম আলিপের ব্যবহৃত স্মার্টফোনটি উদ্ধার করে। একইসাথে, ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় ৬ই অক্টোবর (সোমবার) গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া এলাকা থেকে মূল পরিকল্পনাকারী হৃদয় মোল্যাকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
এই ঘটনায় ভিকটিমের মা রোজিনা বেগম বাদী হয়ে নড়াইল সদর থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-০৭, তারিখ ০৬/১০/২০২৫) দায়ের করেছেন। গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামি আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) নূর এ আলম সিদ্দিকী এবং সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সাজেদুল ইসলামসহ স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা।
ডিবিসি/এএমটি