কাঁটাতারের বেড়া দুই বাংলার মাটিকে ভাগ করলেও ভাগ করতে পারেনি রক্তের টান। মৃত্যুর পর বাংলাদেশে থাকা স্বজনদের শেষবারের মতো মুখ দেখানোর ইচ্ছা পূরণ হলো ভারতীয় নাগরিক পচি খাতুনের (৭৫)।
মানবতা এবং দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আন্তরিকতায় শনিবার (৬ই সেপ্টেম্বর) এমন অভূতপূর্ব দৃশ্যের সাক্ষী হলো মেহেরপুরের মুজিবনগর সীমান্ত।
পচি খাতুন ভারতের নদীয়া জেলার হৃদয়পুর গ্রামের প্রয়াত জামাত শেখের স্ত্রী। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন এবং শনিবার সকালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর আগে তিনি তার শেষ ইচ্ছার কথা জানিয়ে যান। তিনি চেয়েছিলেন, তার মরদেহ যেন বাংলাদেশে অবস্থিত নানাবাড়ির আত্মীয়স্বজনরা অন্তত একনজর দেখার সুযোগ পান।
তার এই ইচ্ছের কথা ভারতীয় সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীকে বিএসএফকে জানালে তারা বিজিবির সাথে যোগাযোগ করে । বিএসএফের সহযোগিতায় ভারতের কৃষ্ণনগর থেকে পচি খাতুনের মরদেহ মুজিবনগর সীমান্তের ১০৫ নম্বর আন্তর্জাতিক মেইন পিলারের কাছে নিয়ে আসা হয়।
খবর পেয়ে সীমান্তে উপস্থিত হন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা। এরপর দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনার পর পচি খাতুনের মরদেহটি শূন্যরেখায় নিয়ে আসা হয়।
এ সময় সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। পচি খাতুনের বাংলাদেশি স্বজনেরা, যারা খবর পেয়ে আগে থেকেই সীমান্তে অপেক্ষা করছিলেন, তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। কিছুক্ষণের জন্য মরদেহটি সেখানে রাখা হলে আত্মীয়স্বজন ছাড়াও আশপাশের গ্রামের মানুষ তাকে শেষবারের মতো দেখতে ভিড় জমান। শেষ দেখা শেষে মরদেহটি আবার ভারতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ।
ডিবিসি/এএমটি