ভোলা-বরিশাল সেতুর দাবিতে ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ করা শিক্ষার্থীরা আজ দুপুরে পদ্মা সেতুতে হেঁটে ওঠার অনুমতি না পাওয়ায় প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে নদী সাঁতরে পার হওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় পদ্মার প্রবল স্রোতে ভেসে গিয়ে তিনজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন।
আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে শিবচরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেছেন, তবে তাদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ঘটনাটি আজ বুধবার (১৯শে নভেম্বর) দুপুরে শরীয়তপুরের নাওডোবা এলাকায় পদ্মা সেতুর নিচে ঘটে।
গ্যাসসমৃদ্ধ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দ্বীপ জেলা ভোলাকে সড়কপথে দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করার দাবিতে শিক্ষার্থীরা এই লংমার্চ কর্মসূচি শুরু করেন।
লংমার্চকারীরা অভিযোগ করেন, সেতু না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাণিজ্যসহ নানা ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছেন ভোলার প্রায় ২২ লাখ মানুষ। যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কষ্ট তুলে ধরতেই তারা এই কর্মসূচি নিয়েছেন।
চলমান লংমার্চের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা আজ নাওডোবা পৌঁছে পদ্মা সেতু দিয়ে হেঁটে পার হওয়ার অনুমতি চান। কিন্তু সেতুতে হাঁটা নিষিদ্ধ থাকায় কর্তৃপক্ষ তাদের সেতুতে উঠতে বাধা দেয়। এরপরেই তারা প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে পদ্মানদী সাঁতরে পার হওয়ার ঘোষণা দেন।
বিকেলে মোট আটজন শিক্ষার্থী নদীতে নামেন। সে সময় পদ্মার পানি ছিল উত্তাল ও প্রবল স্রোতধারা। নদীতে নামার কিছুক্ষণ পরই তাদের মধ্যে তিনজন স্রোতের টানে ভেসে গিয়ে গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা ও স্বেচ্ছাসেবীরা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। পরে পুলিশ ও প্রশাসন এসে বাকিদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়।
একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘সেতু না থাকা ভোলার মানুষের দীর্ঘদিনের কষ্ট। হাঁটতে না দিলে সাঁতরেই দাবি জানাব। সেতু নির্মাণ আমাদের ন্যায্য অধিকার।’ তারা জানান, আন্দোলন শান্তিপূর্ণ এবং দাবির বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।
গত মঙ্গলবার (১১ই নভেম্বর) সকাল ১১টায় ভোলার চরফ্যাশন থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী পায়ে হেঁটে এই লংমার্চ শুরু করেন। তাদের দাবিগুলো হলো: ভোলা-বরিশাল সেতুর নির্মাণকাজ দ্রুত শুরু, ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগ, গ্যাসভিত্তিক শিল্পকারখানা স্থাপন, ভোলায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, এবং উপকূল সুরক্ষায় স্থায়ী বেড়িবাঁধ ও মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ।
শিক্ষার্থীদের এই লংমার্চ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও স্থানীয় জনপদে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তারা বলেছেন, ‘সেতু না থাকার কষ্ট বোঝাতে নদী সাঁতরেই আমরা পথ দেখাচ্ছি।’
ডিবিসি/এনএসএফ