বাংলাদেশ, জাতীয়

পদ্মা সেতু ইস্যুতে ৭ জনকে গ্রেপ্তারে দুদককে চাপ দেয় বিশ্বব্যাংক

Kamrul Islam Rubel

ডিবিসি নিউজ

সোমবার ৬ই জুন ২০২২ ০৪:৫৫:০৭ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করতে বলেছিল বিশ্বব্যাংক।

প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী এবং প্রয়াত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বিশ্বব্যাংকের চাপের কথা দুর্নীতি দমন কমিশনকে জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন তাদের যেন আটক করা হয়। সরকারের দুই নীতি নির্ধারকের কাছ থেকে এমন নির্দেশনা পেয়ে হতবাক হয়ে যান দুদকের তখনকার কমিশনার সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। ডিবিসি নিউজের কাছে পর্দার অন্তারালে ঘটে যাওয়া সেই সব কথা তুলে ধরেছেন দুদকের সাবেক এই কমিশনার, যিনি বর্তমানে আওয়ামী লীগের একজন উপদেষ্টা। 

পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগে এক দশক আগে দুদকের বারান্দায় হাজির হতে হয় সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনকে। বার বার বলছিলেন তিনি নিরাপরাধ। ওই সময়ে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমানও বাধ্য হয়েছিলেন দুদকে হাজির হতে।

তদন্তে শেষ পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। কানাডার আদালতও প্রমাণ পায়নি। তবে মন্ত্রীত্ব ঠিকই খোয়াতে হয়েছে আবুল হোসেনকে। আর সেতু সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে যেতে হয় কারাগারে।

প্রমত্তা পদ্মার বুকে এখন নিজ দেশের অর্থায়নে দৃশ্যমান সেতু। ছয় দশমিক পাঁচ কিলোমিটারের এ সেতুর আজকের এ দৃশ্য দেখতে পার করতে হয় অনেক বাধাবিপত্তি।

সেই সময় দুদক কমিশনার ছিলেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। ডিবিসি নিউজকে জানান, কোনো তথ্য প্রমাণ না দিয়ে বিশ্বব্যাংকের টিম দুদকে এসে চাপ দেয় সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন, অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমানসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করতে।

দুদকের সাবেক কমিশনার সাহাবুদ্দিন চুপ্পু সে সময়ের কথা বর্ণনা করে বলেন, 'বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিরা দু'বার দুদকে আসেন। তারা যোগাযোগ মন্ত্রীকে গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। এছাড়া প্রজেক্ট ডিরেক্টরকেও গ্রেপ্তারে চাপ দেয়। শুধু গ্রেপ্তার নয় এরপর তাদের রিমান্ডে নেয়ার চেষ্টাও চালায় বিশ্বব্যাংক। তারা ভেবেছিলো দুদককে চাপ প্রয়োগ করে তাদের অপচেষ্টা সফল করবে।'

জানান, বিশ্বব্যাংকের এমন অন্যায্য চাপের পর সরকারের একজন মন্ত্রী ও একজন উপদেষ্টাও তাকে ডেকে বিশ্বব্যাংকের নির্দেশনা মেনে ওই সাতজনকে গ্রেপ্তার করতে বলেন।

দুদকের সাবেক এ কমিশনার আরও জানান, সরকারের তৎকালীন অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা আবুল মাল আব্দুল মুহিত এবং প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী জানান বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে অর্থায়নে রাজি হয়েছে তবে তারা কিছু শর্ত দিয়েছে। তখন তারা আবার ৭ জনকে গ্রেপ্তারে চাপ দেয়। বিশ্বব্যাংক আমাদের চাপ সৃষ্টি করছে তাদেরকে আবার অনুসরণ করছে দেশের দুই নীতিনির্ধারক। এমন ঘটনায় নিজের বিস্ময় প্রকাশ করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক কমিশনার সাহাবুদ্দিন চুপ্পু।

জানালেন, তখন দেশের ভেতরে-বাইরের সব চাপ মোকাবিলা করেছে দুদক। সাহাবুদ্দিন চুপ্পু জানান, পদ্মা সেতু প্রকল্পে পুরোপুরি নিরপেক্ষ তদন্ত করেছে দুদক।

আরও পড়ুন