পরকীয়া প্রেমিক ও স্ত্রী মিলে স্বামীর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যাচেষ্টা চালায়। এসময় ভুক্তভোগী স্বামী সোহাগ মিয়ার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন রুমের দরজা ভেঙে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে স্বামীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। স্ত্রী পারভীন বেগম (৩০) ও পরকীয়া প্রেমিক আলামিন মিয়াকে (২২) থানায় নিয়ে যায়।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে পৌর শহরের কমলপুর এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটে।
অভিযুক্ত স্ত্রী পারভীন বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়া চিলোকূট গ্রামের মুন্সি বাড়ির ইদন মুন্সির মেয়ে। এবং অভিযুক্ত পরকীয়া প্রেমিক আলামিন মিয়া ভৈরব পৌর এলাকার গাছতলাঘাটের মকবুল মিয়ার ছেলে।
ভুক্তভোগী স্বামী সোহাগ মিয়া (৪৫) পাদুকা কারখানার শ্রমিক। তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বড়াইল গ্রামে। তিনি পরিবার নিয়ে ভৈরব শহরের কমলপুর উলাকিয়া হাটির লাল মিয়ার বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস করতেন। তার একটি মেয়ে ও একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। মেয়েটি কমলপুর মোজাফফর ব্যাপারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরে স্বামী সোহাগ মিয়ার ভাড়া বাসায় পরকীয়া প্রেমিক ও স্ত্রী মিলে স্বামী সোহাগ মিয়াকে মারধর করে এবং গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার চেষ্টা করে। এসময় সোহাগ মিয়ার চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে আশেপাশের লোকজন গিয়ে জানালার ফাঁক দিয়ে দেখেন দরজা বন্ধ করে স্বামী সোহাগ মিয়াকে তার স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিক মিলে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যার চেষ্টা করছে। তারা দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে অভিযুক্তদের আটক করে থানা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে তাদের দু’জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় এবং আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, ‘আমাদের এলাকায় সোহাগ মিয়া স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। দুপুরের দিকে হঠাৎ চিৎকার শুনে দৌড়ে গিয়ে দেখি বাসার দরজা বন্ধ করা। ভেতরে চেঁচামেচি করছে। পরে আমরা কয়েকজন মিলে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে গিয়ে দেখি সোহাগের স্ত্রী ও তার সাথে একজন পুরুষ দু’জনে মিলে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে জাপটে ধরে রেখেছে। আমরা তাদের কাছ থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। পরে জানতে পারলাম পরকীয়া প্রেমিক নিয়ে তার স্বামীকে হত্যা করতে চেয়েছিল। তাদেরকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি।’
কারখানার সহকর্মী লিটন মিয়া বলেন, ‘সোহাগ আমাদের সাথে জুতার কারখানায় কাজ করেন। তার বাড়িওয়ালার ছোট ভাই ফোন করে জানাল তার স্ত্রী ও তার পরকীয়া প্রেমিক নিয়ে তাকে হত্যা করতে চেয়েছিল।’
এ বিষয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সুরভি আক্তার জানান, রোগীর অবস্থা খুবই খারাপ। সাথে কোনো লোকজন নেই। তাকে ইনজেকশন ও স্যালাইন দিয়েছি। পুলিশ বা স্বজনদের কাউকে পাইনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা পাঠাতে হবে বলে জানান তিনি।
ভৈরব থানার এসআই শহিদুর রহমান জানান, এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে আহত স্বামী সোহাগ মিয়াকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা জন্য পাঠাই এবং ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত স্ত্রী পারভীন বেগম ও পরকীয়া প্রেমিক আলামিন মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে আসি। অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ডিবিসি/আরপিকে