ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে এবার ৯ বছরের এক নারী শিশুকে অপহরণের পর ধর্ষণ করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। রাজ্যের দক্ষিণ ২৪-পরগণা জেলার জয়নগরে এই ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে জয়নগর।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে তথ্য জানা গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত শুক্রবার ওই শিশু তার টিউশন ক্লাস শেষে বাড়ি ফেরার পথে অপহৃত হয়। এরপর সেদিন রাতেই তার মরদেহ উদ্ধার করে গ্রামবাসী। তাদের অভিযোগ, পুলিশ প্রাথমিকভাবে তাদের অভিযোগ দায়ের করতে চায়নি। তবে পুলিশ জানিয়েছে, তারা ঘটনার ৬ ঘণ্টার মাথায় ১৮ বছর বয়সী এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে।
মামলা না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী পুলিশের ওপর আক্রমণ করে স্থানীয় মহিষমারী ফাঁড়িতে ভাঙচুর করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। তাদের অভিযোগ, পুলিশ প্রাথমিকভাবে নির্লিপ্ত ছিল। তারা অভিযুক্তের বাড়িও ভাঙচুর করেছে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সসহ বিপুলসংখ্যক পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয় জয়নগরে।
স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার বিকেলে ৪র্থ শ্রেণির ওই ছাত্রী টিউশন ক্লাসে যোগ দিতে গিয়েছিল। বাড়ি ফেরার পথে সে নিখোঁজ হয়। শিশুর বাবা বলেন, ‘সে টিউশন ক্লাস থেকে বাড়ি ফেরার সময় বিকেল ৫টার দিকে স্থানীয় বাজারে আমার দোকানে এসেছিল। কিন্তু পরে সন্ধ্যায় আমি বাড়িতে পৌঁছালে, আমাকে বলা হয় সে ফেরেনি। আমরা দ্রুতই তাকে খুঁজতে শুরু করি এবং পুলিশের কাছেও যাই।’
ওই শিশুর চাচা বলেন, ‘আমরা মহিষমারী পুলিশ ফাঁড়িতে গেলে তারা আমাদের জয়নগর থানায় যেতে বলা হয়। জয়নগর থানায় আমাদের বলা হয়, এলাকাটি কুলতলী থানার অন্তর্গত।’ তার অভিযোগ, পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানালে, শিশুটিকে এই ভাগ্যের মুখোমুখি হতে হতো না।
এদিকে, পুলিশ জানিয়েছে- তারা সিসিটিভি ফুটেজে শিশুটির সঙ্গে শেষ দেখা যাওয়া মোস্তাকিন সরদার নামে এক স্থানীয় যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর সে অপরাধ স্বীকার করে এবং যে এলাকায় সে মরদেহ ফেলেছিল তা দেখিয়ে দেয়।
বারুইপুর জেলার পুলিশ সুপার পলাশ চন্দ্র ঢালি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘শুক্রবার রাত ৯টার দিকে আমরা তথ্য পাই। অপহরণের মামলা হয়েছে। শনিবার ভোর ৩টার দিকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং সে অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। কিন্তু পুলিশ যখন মরদেহ উদ্ধার করতে সকাল সাড়ে তিনটার দিকে গ্রামে যায় তখন গ্রামবাসী বিক্ষোভ দেখায়।’ তবে তিনি পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, নিখোঁজ রিপোর্ট পাওয়ার পর পুলিশ দ্রুতই পদক্ষেপ নিয়েছে।
অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) বিভিন্ন ধারায় অপহরণ ও খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতন বিরোধী আইন পিওসিএসও- এর বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘হত্যার আগে শিশুটিকে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হতে আমরা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করছি।’
ডিবিসি/ এসএসএস