বাংলাদেশ, জেলার সংবাদ

পাকিস্তানি বাহিনীর দ্বারা বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করার বিষয়টি ‘অবান্তর’: চবি সহ–উপাচার্য

ডেস্ক নিউজ

ডিবিসি নিউজ

রবিবার ১৪ই ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:৩৪:৫৭ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে বুদ্ধিজীবী হত্যার বিষয়টিকে ‘অবান্তর’ বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সহ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান। রোববার (১৪ই ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য দপ্তরে আয়োজিত ‘মুক্তচিন্তা, মুক্তিযুদ্ধ এবং একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যা’ শীর্ষক সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘যে সময় পাকিস্তানি বাহিনী দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছিল, সে সময় তারা বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করবে এটা রীতিমতো অবান্তর বলে আমি মনে করি।’

 

তিনি দাবি করেন, আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশকে ‘করতরাজ্যে’ পরিণত করার লক্ষ্যেই বুদ্ধিজীবীদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় তিনি চলচ্চিত্রকার জহির রায়হানের নিখোঁজ হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, তাঁকে খুঁজে পাওয়া গেলে একাত্তরের প্রকৃত ইতিহাস আরও স্পষ্ট হতো।

 

মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে চবি সহ-উপাচার্য বলেন, ‘রেটরিক বা আলংকারিক বক্তব্য নয়, আমরা বাস্তব সত্য জানতে চাই। ১৯৭১ সালে প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছিল, কারা শহীদ হয়েছেন এবং কারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল এসব তথ্য আজও স্পষ্ট নয়।’ তিনি অভিযোগ করেন, আজ পর্যন্ত শহীদ বা রাজাকারদের কোনো তালিকা হয়নি, বরং শুধু বক্তব্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত ও বিভক্ত করা হয়েছে।

 

তিনি ১৪ই ডিসেম্বরের ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটনে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানান।

 

এদিকে, সহ-উপাচার্যের এমন বক্তব্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। সভায় উপস্থিত বনবিদ্যা ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আল আমিন এই বক্তব্যের সাথে দ্বিমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী ও তাদের সহযোগী রাজাকার, আলবদর ও আলশামস পরিকল্পিতভাবে দেশের শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। স্বাধীন বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতেই এই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল।’

 

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, অনলাইন মিটিংয়ের কারণে তিনি পুরো বক্তব্য শুনতে পারেননি, তাই তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এছাড়া মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহিদুর রহমানও এ নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।

 

সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভাটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী।

 

ডিবিসি/এনএসএফ

আরও পড়ুন