বাংলাদেশ, জেলার সংবাদ

পাবনায় ঈদের আগের রাতে ইউপি চেয়ারম্যানের গোডাউনে মিলল দুস্থদের ৬৫ বস্তা চাল

পাবনা প্রতিনিধি

ডিবিসি নিউজ

সোমবার ১৭ই জুন ২০২৪ ১১:৪১:১০ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

পাবনার সুজানগরে দুস্থদের খাদ্য সহায়তার ৬৫ বস্তা চাউল বিতরণ না করে ব্যক্তিগত গোডাউনে মজুত করে আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। রবিবার (১৬ জুন) ঈদের আগের রাতে উপজেলার নাজিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠে। তবে চেয়ারম্যান এই অভিযোগ মিথ্যা দাবি করলেও গোডাউনে চাউল মজুতের প্রমাণ পেয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

রবিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে গোডাউন পরিদর্শন করে এসব তথ্য জানান সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ।

 

প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, নাজিরগঞ্জ ইউনিয়নে ২৩শ কার্ডে দুস্থদের খাদ্য সহায়তার (ভিজিএফ) চাউল বরাদ্দ রয়েছে। যেটি গত বৃহস্পতিবার থেকে বিতরণ শুরু করে ঈদের আগেই বিতরণ সম্পন্ন করার কথা। কিন্তু সেগুলো সম্পূর্ণরুপে বিতরণ না করে ইউনিয়নের গোয়ারিয়া বাজারে ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমানের ব্যক্তিগত গোডাউনে মজুত রাখা হয়। 

 

রবিবার (১৬জুন) সন্ধ্যা থেকে একটি ভ্যানে ৭/৮ বস্তা করে চাউল বিভিন্ন জায়গায় যেতে লক্ষ্য করে স্থানীয়রা। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর গোডাউনের পাশে লোকজন জড়ো হতে থাকলে চেয়ারম্যানের আজ্ঞাবহ ব্যক্তিরা গোডাউন আটকে সটকে পড়েন। এ ধরণের অভিযোগ পেয়ে রাত ২টার দিকে সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই গোডাউন পরিদর্শনে গিয়ে ৬৫ বস্তা চাউল জব্দ করেন।

 

স্থানীয় বাসিন্দা জানান, রবিবার সন্ধ্যা থেকে ভ্যানে করে ৩০ কেজি বস্তার ভিজিএফ এর চাউল গোডাউন থেকে বের হচ্ছে। তখন আনুমানিক দেড় থেকে ২শ বস্তার মতো চাউল ছিলো। এভাবেই দুস্থদের চাউল নিয়মের বাইরে তার ব্যক্তিগত লোকদের দেয়া হয় এবং পরে সেগুলো তারা ৭/৮শ টাকা বস্তা দরে বিক্রি করেন। এতে করে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা বঞ্চিত হন। এ ধরণের অনিয়মের বিচার হওয়া উচিত।

 

গোয়ারিয়া বাজার এলাকার ভ্যানচালক আব্দুল্লাহ বলেন, সব ইউনিয়নে ঈদের আগে চাউল দিয়ে দিছে। অথচ এখানে গরীবের বাড়ি না গিয়ে চাউল চেয়ারম্যানের গোডাউনে। এটি অবশ্যই আত্মসাৎ করতে চেয়েছিলেন। এভাবেই সব আত্মসাৎ হয়ে যাচ্ছে, বঞ্চিত হচ্ছে দুস্থ ও গরীবেরা।

 

এদিকে আত্মসাৎ চেষ্টার অভিযোগ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র দাবি করেছেন চেয়ারম্যান মশিউর রহমান। তিনি বলেন, অতিরিক্ত গরমের কারণে প্রায় দেড়শো লোক চাউল নিতে আসে নাই। বাধ্য হয়ে তাদের চাউল গোডাউনে রাখা হয়েছে। ঈদের পরে সুবিধাভোগীদের ডেকে বিতরণ করা হবে। তাছাড়া এটি ব্যক্তিগত গোডাউন নয়, ইউনিয়ন পরিষদের জন্য অনুমোদিত গোডাউন।

 

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ বলেন, আপাতত ৬৫ বস্তা চাউল গোডাউনে পেয়েছি। যেটি ঈদের আগেই বিতরণ শেষ হবার কথা। কিন্তু চেয়ারম্যান বলছেন অতিরিক্ত গরমের কারণে প্রায় দেড়শো সুবিধাভোগী চাউল নিতে আসেন নাই। সেগুলো উনি গোডাউনে রেখেছেন। যেগুলো বিতরণে কথা বলা হচ্ছে সেগুলো ঠিকঠাক বিতরণ হয়েছে কি না সেটি খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছি।

 

মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ আরও বলেন, ওই ৬৫ বস্তা চাউল জব্দ করে ইউপি সচিব, গ্রাম পুলিশ ও স্থানীয় ইউপি সদস্যের জিম্মায় রেখে আসা হয়েছে। এতোগুলো চাউল বিতরণ হয়নি অথচ উনি (চেয়ারম্যান) সংশ্লিষ্ট কাউকেই জানাননি। এখানে নিয়মের ব্যত্যয় হয়েছে। এছাড়া আত্মসাতের অভিযোগসহ অন্যান্য সকল বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

ডিবিসি/এএনটি

আরও পড়ুন