উত্তর ফিলিপাইনের প্রত্যন্ত অঞ্চলে একটি পোষা কুকুরকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটনার মর্মান্তিক ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর দেশের পশু অধিকার কর্মীরা পশু কল্যাণ আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ ও শক্তিশালী করার দাবি জানিয়েছেন।
মাউন্টেন প্রদেশের সাদাঙ্গা শহরে গত ৪ঠা ডিসেম্বর এই নৃশংস ঘটনাটি ঘটে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, 'অ্যাক্সেল' নামের আমেরিকান বুলি কুকুরটিকে একজন লোক কাঠ দিয়ে বারবার আঘাত করছে। কুকুরটি যন্ত্রণায় চিৎকার করছে এবং বারবার পালানোর চেষ্টা করছে। পরে আঘাতের কারণে কুকুরটি মারা যায়।
ইউটিউব, টিকটক এবং ফেসবুকে দ্রুত এই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে তা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হাজার হাজার মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। পশুপ্রেমী গোষ্ঠীগুলো #JusticeForAxle হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু করলে এটি জাতীয় খবরে পরিণত হয়।
স্থানীয় কুসংস্কার বনাম আইন প্রাথমিকভাবে হামলাকারীকে একজন নির্বাচিত কাউন্সিলর হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও, সাদাঙ্গা পৌর কর্তৃপক্ষ পরে জানায় যে অভিযুক্ত ব্যক্তি স্থানীয় সরকারের একজন চালক।
সাদাঙ্গা এলাকার মেয়র রবার্ট ওয়ানাভান জানিয়েছেন, স্থানীয় কুসংস্কার অনুযায়ী, যদি কোনো কুকুর কোনো ব্যক্তির গায়ে প্রস্রাব করে, তবে তা দুর্ভাগ্য বা মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। হামলাকারী ব্যক্তি হয়তো ক্ষোভের বশে এই কাজটি করেছেন।
ফিলিপাইন অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি এর নির্বাহী পরিচালক ও আইনজীবী আন্না ক্যাব্রেরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, এই ধরনের বিশ্বাস পশু কল্যাণ আইনের কোনো ছাড়ের আওতায় পড়ে না। কারণ আইন কেবল অনুমোদিত উপজাতীয় বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে পশু হত্যার অনুমতি দেয়। অ্যাক্সেলকে হত্যা করা তাই সম্পূর্ণ অবৈধ।
মামলা দায়ের ও বাধা পশু কল্যাণ আইন অনুযায়ী, কোনো প্রাণীকে হত্যা করার জন্য দোষী সাব্যস্ত হলে অভিযুক্তের দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবংঅথবা ১,০০,০০০ ফিলিপাইন পেসো (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা) জরিমানা হতে পারে।
তথ্যসূত্র দ্য সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
ডিবিসি/এমইউএ