বিবিধ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

পুরুষ হয়ে গর্ভ ধারণ, পরিচয় নিয়ে বিব্রত গর্ভধারিনী বাবা

Faruque

ডিবিসি নিউজ

শনিবার ২৫শে ডিসেম্বর ২০২১ ১২:২২:৩৮ পূর্বাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

২০২০ সালের মার্চ মাসে বেনেট জানতে পারেন যে তিনি গর্ভবতী। অক্টোবরে সিজারিয়ানের মাধ্যমে হাডসন নামে একটি সুন্দর শিশুর জন্ম দেন।

লস অ্যাঞ্জেলেস নিবাসী ৩৭ বছর বয়সী পুরুষ (পরে যিনি মা হন) বেনেট ক্যাসপার উইলিয়ামস। ১০ বছর আগে ২০১১ সালে বেনেট প্রথম টের পান তিনি পরিবর্তিত হচ্ছেন ধীরে ধীরে। তিন বছর পর পর্যন্ত তিনি নিজেকে স্বেচ্ছা-স্থানান্তর করতে চাননি। ছয় বছর পর তিনি তার ভবিষ্যৎ ‘স্বামী’ মালিককে খুঁজে পান। ২০১৯ সালে তারা বিয়ে করেন। এর পর এই দম্পতি সিদ্ধান্ত নেন, তারা সন্তান জন্ম দেবেন। এর পর তারা খুঁজতে থাকেন- সন্তান নেয়ার কোন কোন সুযোগ তাদের জন্য আছে। বেনেট মনে করেন গর্ভধারণ এবং সন্তান গর্ভে বহন করা তার জন্য সুবিধাজনক হবে।

হেরাল্ড ডট কমের প্রতিবেদনে জানা যায়, বেনেট বলেন, পুরুষ হলেও আমি মোটামুটি নিশ্চিত ছিলাম যে আমি গর্ভধারণ করতে পারব। কিন্তু এটি এমন কিছু ছিল না যা আমি কখনো করতে চাইনি, যতক্ষণ না আমি শিখেছি লিঙ্গসংক্রান্ত কোনো ধারণা থেকে আমার শরীরের কার্যকারিতাকে কিভাবে আলাদা করতে হয়।

আমি আমার শরীরকে একটি হাতিয়ার হিসেবে ভাবতে শিখেছি। লিঙ্গভিত্তিক স্টেরিওটাইপ নয়, আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে আমি এমন ব্যক্তি হতে পারি যে একটি শিশুকে পৃথিবীতে আনতে পারে। যতক্ষণ না আপনি চেষ্টা না করেন ততক্ষণ পর্যন্ত কেউ সত্যিই জানতে পারবে না যে সন্তান ধারণ করা সম্ভব কিনা। জরায়ু নিয়ে জন্ম নিলেই গর্ভ ধারণ বা বহন নিশ্চিত হয় না।

২০২০ সালের মার্চ মাসে বেনেট জানতে পারেন যে তিনি গর্ভবতী। কিন্তু শিগগিরই তার উচ্ছ্বাস মহামারিজনিত উদ্বেগের সাথে যুক্ত হয়। বেনেট বলেন, আমরা অল্প সময়ের জন্য চেষ্টা করেছিলাম। তাই আমরা আশা করি যে প্রক্রিয়াটি বেশি সময় নেবে। এটি ২০২০ সালের মার্চ মাসে, এখানে লকডাউনের প্রায় এক সপ্তাহ আগে ছিল। আমি উদ্বিগ্ন ছিলাম, কিভাবে এই মহামারিতে আমি নিজেকে এবং আমার শিশুকে নিরাপদ রাখব।

তিনি ২০২০ সালের অক্টোবরে সিজারিয়ানের মাধ্যমে হাডসন নামে একটি সুন্দর শিশুর জন্ম দেন। কিন্তু হাসপাতালে থাকার সময় বেনেটকে বার বার ‘লিঙ্গ’ নিয়ে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল। তার মুখের দাড়ি আর তার সমতল বুক এই সিদ্ধান্তহীনতার কারণ ছিল। এ ছাড়া তাকে ‘মা’ ডাকায় নার্সদের ওপর ভীষণ খেপেন তিনি।

তিনি বলেন, আমার গর্ভাবস্থা আমাকে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল। ‘ভুল লিঙ্গ’ আমার গর্ভাবস্থায় চিকিৎসাসেবা নেয়ার সময় আমার প্রধান প্রতিবন্ধকতা ছিল। গর্ভাবস্থার ব্যবসা-এবং হ্যাঁ, আমি ব্যবসা বলছি; কারণ আমেরিকায় গর্ভাবস্থার যত্নের পুরো ‘মাতৃত্ব’ বিষয়টি লিঙ্গের সাথে এতটাই জড়িত যে ‘ভুল লিঙ্গ’ হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া কঠিন ছিল। আমার দাড়ি, একটি চ্যাপ্টা বুক এবং একটি ‘পুরুষ’ লিঙ্গ চিহ্নিতকারী থাকলেও, লোকেরা আমাকে ‘মা’ বা ‘ম্যাম’ বলে ডাকতে পারেনি। আর এটাই আমাকে বিষণ্ন আর অসন্তুষ্ট করে তুলেছিল।

আরও পড়ুন