বিবিধ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

পৃথিবীর একমাত্র অমর প্রাণী 'টুরিটপসিস ডোহরনি' নামের জেলিফিশ

ডেস্ক নিউজ

ডিবিসি নিউজ

রবিবার ৭ই ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:১৮:২৫ অপরাহ্ন
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

পৃথিবীতে জন্ম নিলে মৃত্যু অবধারিত, প্রকৃতির এই ধ্রুব সত্যকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে ছোট্ট একটি সামুদ্রিক প্রাণী। বিজ্ঞানীদের মতে, এই প্রাণীটি জৈবিকভাবে অমর।

বিস্ময়কর এই জেলিফিশটির নাম 'টুরিটপসিস ডোহরনি'। পৃথিবীর বুকে এটিই একমাত্র প্রাণী, যার বার্ধক্যজনিত মৃত্যু নেই। মাত্র ৪.৫ মিলিমিটার বা একটি ছোট নখের সমান এই জেলিফিশের জীবনচক্র সাধারণ প্রাণীদের মতো নয়। 

 

সাধারণত জেলিফিশের জীবন শুরু হয় 'পলিপ' বা লার্ভা দশা থেকে এবং পূর্ণাঙ্গ রূপ বা 'মেডুসা' দশায় পৌঁছানোর পর তারা মারা যায়। কিন্তু টুরিটপসিস ডোহরনি পূর্ণবয়স্ক হওয়ার পর বা কোনো আঘাত পেলে নিজেকে আবারও লার্ভা বা পলিপ অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

 

বিজ্ঞানের ভাষায় এই বিরল প্রক্রিয়াকে বলা হয় 'ট্রান্সডিফারেনশিয়েশন'। সহজ কথায় বিষয়টি অনেকটা একটি পূর্ণবয়স্ক প্রজাপতির পুনরায় শুয়োপোকায় রূপান্তরিত হওয়ার মতো ঘটনা। এই প্রক্রিয়ায় তারা নিজেদের কোষের গঠন পরিবর্তন করে আবার নতুন জীবন শুরু করে এবং এই চক্র তারা বারবার ঘটাতে পারে, যা তাদের তাত্ত্বিকভাবে অমর করে তুলেছে। 

 

১৯৮৮ সালে খ্রিস্টান সোমার নামের এক জার্মান মেরিন-বায়োলজি ছাত্র ইতালির উপকূলে প্রথম এই জেলিফিশের সন্ধান পান। বর্তমানে জাপান এবং ভূমধ্যসাগরের উষ্ণ জলসীমায় এদের বেশি দেখা যায়।

 

তবে 'অমর' বলা হলেও এদের মৃত্যু একেবারে অসম্ভব নয়। বিজ্ঞানীরা জানান, এদের অমরত্ব মূলত বার্ধক্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, অর্থাৎ বয়সের কারণে এরা মারা যায় না। তবে সাগরের অন্য বড় মাছ বা শিকারি প্রাণী যদি এদের খেয়ে ফেলে কিংবা কোনো মরণঘাতী রোগে আক্রান্ত হয়, তবে এদের মৃত্যু ঘটতে পারে।

 

প্রকৃতির এই বিস্ময়কর সৃষ্টি বিজ্ঞানীদের সামনে উন্মোচন করেছে দীর্ঘজীবনের নতুন রহস্য, যা ভবিষ্যতে মানবদেহের বার্ধক্য রোধ ও কোষের পুনর্গঠন গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

 

সূত্র: ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম

 

ডিবিসি/এনএসএফ

আরও পড়ুন