আন্তর্জাতিক, অন্যান্য

প্রকৃতির অবিশ্বাস্য খেয়াল: অস্ট্রেলিয়ার রহস্যময় ‘গোলাপি হ্রদ’

ডেস্ক নিউজ

ডিবিসি নিউজ

৫৪ মিনিট আগে
Facebook NewsTwitter NewswhatsappInstagram NewsGoogle NewsYoutube

নীল সমুদ্রের বুক চিরে জেগে ওঠা সবুজ দ্বীপ, আর তার ঠিক মাঝখানে টলটলে গোলাপি জলের আধার। অস্ট্রেলিয়ার ‘লেক হিলিয়ার’ বা গোলাপি হ্রদকে একঝলক দেখলে যে কেউ ধাঁধায় পড়ে যেতে পারেন। মনে হতে পারে, কেউ বুঝি বিশাল কোনো পাত্রে গ্যালন গ্যালন স্ট্রবেরি মিল্কশেক গুলে রেখেছে। পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার মিডল আইল্যান্ডে অবস্থিত প্রকৃতির এই অবিশ্বাস্য খেয়াল আর রহস্যময় সৌন্দর্য নিয়ে প্রতিনিয়তই মুগ্ধ হচ্ছে বিশ্ববাসী।

১৮০২ সালে ব্রিটিশ অভিযাত্রী ম্যাথু ফ্লিন্ডার্স প্রথম এই হ্রদটি আবিষ্কার করেন। প্রশান্ত মহাসাগরের গাঢ় নীল জলের ঠিক পাশেই এর অবস্থান, যা ওপর থেকে দেখলে রঙের এক অদ্ভুত সুন্দর বৈপরীত্য তৈরি করে। প্রায় ৬০০ মিটার দীর্ঘ এই হ্রদটি বিশ্বের অন্যান্য রঙিন জলাশয় থেকে একেবারেই আলাদা, কারণ এর পানি কোনো পাত্রে বা বোতলে তুলে আনলেও তার গোলাপি রঙ বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হয় না।

 

দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞানীদের কাছে এক বড় রহস্য ছিল এই হ্রদের পানির রঙ। পরবর্তীতে গবেষণায় দেখা গেছে, এর নেপথ্যে রয়েছে ‘ডুনালিয়েলা সালিনা’ নামক এক বিশেষ ধরণের আণুবীক্ষণিক শ্যাওলা এবং হ্যালোব্যাকটেরিয়া। হ্রদের পানিতে লবণের পরিমাণ যখন সাগরের চেয়েও বহুগুণ বেড়ে যায়, তখন এই অণুজীবগুলো নিজেদের রক্ষার্থে সূর্যের আলো ব্যবহার করে বিটা-ক্যারোটিন নামক লালচে রঞ্জক পদার্থ তৈরি করে। লবণের সাদা স্ফটিক আর এই লালচে রঞ্জকের মিশ্রণেই পানির রঙ এমন জাদুকরী গোলাপি দেখায়।

 

লবণের ঘনত্ব অত্যধিক হওয়ার কারণে মৃত সাগরের মতোই এই হ্রদে মানুষ সহজেই ভেসে থাকতে পারে। এখানকার পানি মানুষের ত্বকের জন্য ক্ষতিকর নয়।

 

তবে এই বিরল ইকো-সিস্টেম বা বাস্তুতন্ত্র রক্ষার্থে অস্ট্রেলিয়া সরকার সাধারণ পর্যটকদের হ্রদের পানিতে নামা বা সাঁতার কাটা নিষিদ্ধ করেছে। তাই পর্যটকরা সাধারণত হেলিকপ্টার বা বিমানে চড়ে আকাশপথেই এই গোলাপি হ্রদের মায়াবী সৌন্দর্য উপভোগ করে থাকেন। প্রকৃতির ক্যানভাসে আঁকা এই গোলাপি হ্রদটি সত্যিই পৃথিবীর এক অনন্য বিস্ময়।

 

সূত্র: হিলার লেক

 

ডিবিসি/এনএসএফ

আরও পড়ুন