রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার সংস্কারে বিভিন্ন দলের মধ্যে মতপার্থক্য দূর করে একটি সমন্বিত রূপরেখা তৈরির লক্ষ্যে ‘জুলাই সনদ’ চূড়ান্ত করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবারও আলোচনায় বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে আজ রবিবার (১৩ই জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় এই সংলাপ শুরু হয়। এটি কমিশনের দ্বিতীয় দফার দ্বাদশ দিনের আনুষ্ঠানিক আলোচনা।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আজকের বৈঠকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়—তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত বিধিমালা এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণার প্রক্রিয়া। এই বিষয়গুলো পূর্ববর্তী আলোচনাতেও উঠেছিল, কিন্তু কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব না হওয়ায় আজকের বৈঠকে এগুলো পুনরায় অধিকতর পর্যালোচনার জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
বৈঠকের সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। কমিশনের পক্ষে আরও উপস্থিত আছেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
সংলাপের শুরুতে অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ রাজনৈতিক দলগুলোকে একটি সমঝোতামূলক অবস্থানে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, "আপনাদের প্রতি অনুরোধ, একটি মাঝামাঝি স্থানে এসে আমাদের দাঁড়াতে হবে। পরবর্তীতে জনগণের প্রতিনিধিত্ব লাভ করলে আপনারা তা পরিবর্তন করতে পারেন, কিন্তু বর্তমানে একটি ঐকমত্যে পৌঁছানো জরুরি।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা আপনাদের বক্তব্যকে গুরুত্বহীন মনে করছি না, বরং আমরা চাচ্ছি সকলে একটি ঐকমত্যে পৌঁছাক। কিছুটা ছাড় দিয়ে ও অবস্থান পরিবর্তন করে একটি জায়গায় আসুন, না হলে আমরা যেখানে আছি, সেখানেই থেকে যাব।"
আজকের সংলাপে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি এবং আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন। এর আগে কমিশন প্রধানমন্ত্রীর পদের মেয়াদকাল, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি এবং সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের জন্য স্বতন্ত্র কমিটি গঠনসহ বিভিন্ন বিষয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছে।
আলোচনা শেষে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা গণমাধ্যমের কাছে বৈঠকের সারসংক্ষেপ তুলে ধরবেন বলে জানা গেছে। পুরো আলোচনা অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) সরাসরি সম্প্রচার করছে।
ডিবিসি/আরএসএল