দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং ৩২ হাজার শূন্য পদে দ্রুততম সময়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (১৪ই জুলাই) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এই নির্দেশনা দেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা প্রাথমিক শিক্ষার বর্তমান মান এবং ভালো ফল করা বিদ্যালয়গুলোর বিষয়ে মূল্যায়ন জানতে চান। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, অবকাঠামো উন্নয়নে বিপুল অর্থ ব্যয় হলেও শিক্ষার মানের কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হয়নি। মন্ত্রণালয় এখন বিদ্যালয়গুলোর মূল্যায়ন করে র্যাঙ্কিং করছে এবং পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কর্মসূচি হাতে নিচ্ছে।
ড. বিধান রঞ্জন রায় আরও উল্লেখ করেন, মূল্যায়নে দেখা গেছে যে সকল বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ভালো, সেখানে প্রধান শিক্ষকের যোগ্যতা এবং সহকর্মীদের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক বড় ভূমিকা পালন করছে। তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন যে দেশের ৩২ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ বর্তমানে শূন্য রয়েছে এবং এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান আছে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এই বিশাল শূন্য পদ পূরণের জন্য কেবল পদায়ন নয়, নতুন নিয়োগের ওপরও জোর দেন। তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের প্রাধান্য দিতে হবে। এক্ষেত্রে অভিজ্ঞ শিক্ষকদের পাশাপাশি তরুণদেরও প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের সুযোগ দেওয়ার কথা বলেন তিনি। এই নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন তিনি।
এছাড়াও, শিক্ষকদের বদলির ক্ষেত্রে একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা তৈরির নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, সুপারিশ বা তদবিরের মাধ্যমে বদলি বন্ধ করে একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষকদের বদলি নিশ্চিত করতে হবে।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বিদ্যালয়গুলোতে মেয়েদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা এবং নারীবান্ধব অবকাঠামো নিশ্চিত করার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন। তিনি পরামর্শ দেন যে বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের কমিটিতে অন্তত একজন নারী স্থপতিকে রাখতে হবে যাতে নারী শিক্ষার্থীদের সুবিধার বিষয়টি পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে গুরুত্ব পায়। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধারাবাহিকভাবে ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন এবং মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ তৈরির বিষয়েও জোর দেন।
ডিবিসি/আরএসএল